শাপলা প্রতীক পেতে এনসিপি অনড়, ইসিতে আবেদন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শাপলা প্রতীক নিয়ে লড়তে অনড় জুলাই যোদ্ধাদের গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
সে লক্ষ্যে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা- ২০০৮ এর বিধান সংশোধনপূর্বক শাপলা, সাদা শাপলা অথবা লাল শাপলাকে প্রতীক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে বরাদ্দের জন্য ফের নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জানিয়েছে তারা।
বুধবার এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলামের সই করা একটি আবেদন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব বরাবর পাঠানো হয়।
আবেদনে দলটি লিখেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিবিধ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নতুন করে নির্বাচনি প্রতীক তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নেয়। নির্বাচন কমিশনের তালিকায় প্রতীক যুক্ত করতে একটি কমিটি হয়। যারা ১৫০টি প্রতীক অন্তর্ভুক্তির চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করে।
কমিটির একজন সদস্যের সঙ্গে এনসিপির প্রতিনিধি দলের গত ৪ জুন বৈঠক হয়। এতে তিনি চূড়ান্ত তালিকায় ‘শাপলা’ প্রতীক থাকার বিষয়টি আশ্বস্ত করেন। এছাড়া এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়।
লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে , জাতীয় নাগরিক পার্টি—এনসিপি চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর থেকেই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধি দল নিয়মিত মতবিনিময়, বৈঠক ও যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে। এনসিপির প্রতিনিধি দল এপ্রিল থেকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নির্বাচনসংক্রান্ত আইন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন প্রক্রিয়া, নিবন্ধনের সময়সীমা, প্রবাসীদের ভোটাধিকারসহ নির্বাচনকেন্দ্রিক নানান বিষয় নিয়ে নিয়মিত আলোচনায় অংশ নিচ্ছে।
এছাড়া ২০২৫ সালের জুলাই মাসে এনসিপি দেশজুড়ে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে এবং উক্ত কর্মসূচিতে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ এনসিপি-কে আপন করে নেয় এবং খাল-বিল-জলাশয় থেকে শাপলা সংগ্রহ করে উক্ত কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এনসিপির প্রতীক হিসেবে শাপলাকে হৃদয় থেকে বরণ করে নেয়।
তারা লিখেছে, এরপর ২২ জুন এনসিপি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে প্রকাশিত ১০ মার্চ স্মারকের গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন দাখিল করে এবং দলের অনুকূলে ‘শাপলা’ প্রতীক সংরক্ষণের জন্য আবেদন জানায়।
জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি নির্বাচন কমিশনের কাছে ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশের জনসাধারণ এনসিপির প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’-কে চিনতে শুরু করে এবং গণমানুষের সঙ্গে এনসিপির শাপলা প্রতীক কেন্দ্রীক এক অভূতপূর্ব সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
দলটি আশা করছে, নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালের নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে জাতীয় নাগরিক পার্টির অনুকূলে ১. শাপলা, ২. সাদা শাপলা, এবং ৩. লাল শাপলা থেকে যেকোনো একটি প্রতীক বরাদ্দ করবে এবং এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ইতঃপূর্বে মনোভাব পরিত্যাগ করবে এবং এমনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে যাতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন ও সব দলের ক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহ জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।
দলটি লিখেছে, কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হঠাৎ করে ৯ জুলাই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে এনসিপি জানতে পারে যে, নির্বাচন কমিশন শাপলাকে নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে তফসিলভুক্ত না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ‘শাপলা’ জাতীয় প্রতীক হওয়ায় নির্বাচনের প্রতীক হিসেবে এটি বিধিমালার তফসিলভূক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানায় নির্বাচন কমিশন।