সংস্কারের নামে কোনো তালবাহানা চলবে না: আব্দুল আউয়াল মিন্টু।

মো: রাজন পাটওয়ারী, স্টাফ রিপোর্টার চাঁদপুর:
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চাঁদপুর জেলা বিএনপির উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৭ফেব্রুয়ারী) বিকাল ৩ টা হাসান আলী মাঠে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় চাঁদপুর জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে উপস্থিত হন। চাঁদপুর হাসান আলী মাঠে হাজারো মানুষের ঢল।
নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোঘণার দাবি জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, সংস্কারের নামে কোনো তালবাহানা চলবে না। সোমবার বিকেলে চাঁদপুর শহরের হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এই মন্তব্য করেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, পতিত ফ্যাসিবাদের অপচেষ্টা মোকাবিলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘আমরা অচিরেই একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। সংস্কারের নামে কোনো তালবাহানা চলবে না। তালবাহানা না করে নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করুন। আমরা এই সরকারকে সমর্থন দিয়েছিলাম এখনো দিচ্ছি। কিন্তু এই সরকারের সময় যেভাবে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। তার থেকে উত্তরণের একটি পথ হচ্ছে দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা।’
এসময় বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের সকল জায়গায় আমরা কয়েকটি কারণে একত্রিত হচ্ছি। তা হলো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ বিভিন্ন জনদাবি নিয়ে।’
এই সরকারের দায়িত্ব হলো একটি গ্রহন যোগ্য নির্বাচন করা। আপনারা জানেন গত ১৭ বছর আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। উদার গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে একটি গনতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য।’ যোগ করেন আব্দুল আওয়াল মিন্টু।
সাবেক এই মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা মানুষের গনতান্ত্রিক অধিকার ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলন করেছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে। এখন আমাদের ছোট ছোট ভাইবোনেরা মনে করে তাদের আন্দোলনেই বিগত সরকার বিদায় নিচ্ছে এটা কি ঠিক? এটা ঠিক না। আমরা চাই একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক। অন্যথায় এদেশের জনগণ যদি আন্দোলন সংগ্রামে নামে তাহলে আপনাদের অবস্থাও কিন্তু নড়বড়ে হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার সংস্কারের কথা বলছে। আমরাও সংস্কার চাই, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু সংস্কারের নামে তালবাহানা চলবেনা। জনগণ যদি চায় তাহলে আশা করছি আগামীতে আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে সরকার গঠন করব।’
মিন্টু বলেন, ‘যারা আজকে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চায়, আমরা মনেকরি এটিও একটি ষড়যন্ত্র। পাশাপাশি একটি কথা বলব– আমাদের নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। নিজের মধ্যে বিভেদ করা যাবে না। অদূর ভবিষ্যতে যখন নির্বাচন হবে তখন যেই মনোনয়ন পাক তাকে নির্বাচিত করতে হবে।’
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি (কুমিল্লা বিভাগীয়) সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মোস্তাক মিয়া, এলডিপি কেন্দ্রীয় নেতা আবু তাহের, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ব্যাংকিং ও রাজস্ব বিষয়ক সম্পাদক লায়ন হারুনুর রশীদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক। চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিম উল্যাহ সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন মাঝি, অ্যাডভোকেট হারুনুর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মোশারফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল মিশন ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন খানের যৌথ সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুবুর আনোয়ার বাবলু, সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন খান বাবুল, আব্দুস শুক্কুর পাটওয়ারী, দেওয়ান মো. সফিকুজ্জামান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সেলিমউস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনির চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক অ্যাড. জহির উদ্দিন বাবর, আফজাল হোসেন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুনিরা চৌধুরী, জেলা কৃষক দলের সভাপতি এনায়েত উল্যাহ খোকন, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা মুক্তা, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাদল, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নূরুল আমিন খান আকাশ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাসুদ মাঝি, জেলা ছাত্র দলের সভাপতি ইমাম হোসেন গাজী।
সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলওয়াত করেন জেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা জসিম উদ্দিন
পাটওয়ারী।