যৌতুকের টাকা না দেয়ায় স্বামীর এসিড সন্ত্রাসের শিকার এক নারী, যত্রনায় কাতরাচ্ছে হাসপাতালে

একেএম বজলুর রহমান , পঞ্চগড়
যৌতুকের টাকা না দেয়ায় স্বামীর এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে লিমা নামের এক নারী। আহত অবস্থায় সে এখন যত্রনায় কাতরাচ্ছে হাসপাতালের বিছানায়। ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম লিমা আক্তার। সে সিরাজুল ইসলামের মেয়ে।
অভিযুক্ত ওই স্বামীর নাম মিঠু ইসলাম। তার বাড়ি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার ইউনিয়নের মোস্তফাপুর হাজি প্রধানপাড়া এলাকায়। সে মফিজুল ইসলামের ছেলে।
এঘটনায় ওই নারী তার স্বামী মিঠু ইসলাম (২৫) শ্বশুর মফিজুল ইসলাম (৫০), শ্বাশুড়ি রুবি বেগম (৪৮) ও ননদ বিউটি আক্তার (৩০) এর নামে দেবীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এসিড সন্ত্রাসের শিকার আহত গৃহবধূ লিমা আক্তার (১৯) বর্তমানে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী বাদী হয়ে দেবীগঞ্জ থানায় স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ লিমা আক্তার জানান, প্রায় দেড় বছর আগে মিঠু ইসলামের সাথে ২৫) সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে নগদ চার লক্ষ টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালঙ্কারও প্রদান করে দরিদ্র বাবা। বিয়ের পর সংসার করা অবস্থায় শ্বশুর শ্বাশুড়ি ও ননদের উষ্কানিতে স্বামী মিঠু ইসলাম নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন এবং যৌতুক হিসেবে আরও পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করতে থাকেন।
লিমা আক্তার আরও জানান, গত ২ আগস্ট রাতে স্বামী, শ্বশুর শ্বাশুড়ি ও ননদ একত্র হয়ে যৌতুক না আনার জন্য আমাকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাকে হত্যা চেষ্টাও চালানো হয়। মারধর করার সময় এক পর্যায়ে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধের চেষ্টা করে। পরে রাত ১২ টার দিকে আমি ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় স্বামী মিঠু ভ্যাসলিনের (মেরিল) কৌটায় এসিড নিয়ে মুখে ঢেলে দেয়। এতে তাঁর ঠোঁট ও জিভের কিছু অংশ ঝলসে যায়।
পরদিন সকালে আহত অবস্থায় লিমা তার পিত্রালয়ে ফিরে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানালে প্রথমে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া নেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ৪ আগস্ট দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যদের দাবি , এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাচেষ্টা ও এসিড হামলার ঘটনা। স্থানীয় ভাবে বিষয়টি আপোষ মীমাংসার চেষ্টা হলেও পুনরায় নির্যাতন শুরু হওয়ায় তারা আইনের আশ্রয় নিয়েছেন।
এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।