নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকে অতিথি, বিজিবি’র জনসচেতনতামূলক সভায় তীব্র সমালোচনা

একেএম বজলুর রহমান , পঞ্চগড়:
পঞ্চগড় জেলার মাগুরমারী সীমান্ত ফাঁড়ীর আয়োজনে অমরখানা ইউনিয়নের চেকরমারী বাজারে এক জনসচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষকে সুরক্ষা, সীমান্ত আইন-শৃঙ্খলা, মাদক ব্যবসা রোধ ও নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন করা।
এই সভায় নিষিদ্ধ সংগঠনের জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ও অমরখানা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা নুরুজ্জামান নুরুকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
নুরুজ্জামান নুরু একসময় এলাকায় চোরাচালান, মাদক, জমি দখলসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ১নং অমরখানা ও সাতমেরা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় তার দাপট ও প্রভাব সম্পর্কে স্থানীয়রা জানান, তিনি চোরাচালান, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ইন্ধনদাতা ছিলেন।
স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, এমন নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকে নিরাপত্তা ও সীমান্ত সংক্রান্ত জনসচেতনতা সভায় আমন্ত্রণ দেয়া কি সরকারের নিরপেক্ষতা ও জনসাধারণের আস্থার জন্য উদ্বেগজনক নয়? তাদের মতে, এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে সীমান্ত নিরাপত্তায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং জনসাধারণের আস্থা কমিয়ে দিতে পারে।
এবিষয়ে অমরখানা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আবু মায়েদ সরকার মুকুট বলেন, বিজিবি যদি নুরুজ্জামান নুরুকে নিয়ে কোনো প্রোগ্রাম আয়োজন করে থাকে, তাহলে তা মোটেই সমীচীন হয়নি। কারণ, নুরুজ্জামান নুরু দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন ও বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত থাকায় তিনি জনগণের আস্থার বাইরে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে যখন নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতা তৈরি করার চেষ্টা চলাচ্ছে নিষিদ্ধ সংগঠনের লোকজন, ঠিক সেই সময়ে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামিলীগের লোকজনকে নিয়ে বিজিবি জনসচেতনতামূলক সভা করার ঘটনা গভীর আশঙ্কার সৃষ্টি করছে। এটি একটি অত্যন্ত অনভিপ্রেত এবং অনুচিত কর্মকাণ্ড, যা সমাজে বিভ্রান্তি ও অশান্তি সৃষ্টির পথ প্রশস্ত করতে পারে।
বিজিবিকে অনুরোধ করবো, তারা যেন তাদের কর্মসূচি নিরপেক্ষ ও সার্বজনীন রাখে এবং কোনও নিষিদ্ধ বা বিতর্কিত ব্যক্তিকে অনুষ্ঠান থেকে দূরে রাখার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক ও সামাজিক সংহতি রক্ষায় ভূমিকা রাখে।”
অন্যদিকে, নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন, সীমান্ত এলাকায় অপরাধ কমানোর লক্ষ্যে নিয়মিতভাবে জনসচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। কাউকে আলাদা করে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আজকের সভায় শুধুমাত্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন, অন্য কাউকে তারা চেনেন না। কেউ অনুপ্রবেশ করে থাকলে তাদের জানা নেই।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিজিবি কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানায় না, উপস্থিতির মধ্যে ছিল শুধুমাত্র জনপ্রতিনিধি ইউপি চেয়ারম্যান।