বাকিতে না দেয়ায় দোকানদারকে গুলি : সাবেক এমপির বড় বোনের পালক ছেলে অস্ত্রধারী গোলাপ

আশরাফুল ইসলাম গাইবান্ধা ::
গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার উপজেলার খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের নাপিত বাজারে ১৩ আগস্ট বুধবার বেলা ১২টার দিকে বাকী না দেওয়ায় হোটেল মালিকের ছেলে ওয়াসিম আকন্দ (১৮) কে গুলি করেছে গোলাপ প্রামানিক (৩৬) নামে এক মাদকসেবী। এসময় বাঁধা দেওয়ায় সেলিনা বেগম (৪০) নামে এক মহিলাকেও গুলি করে। এতে দুই জনেই প্রানে রক্ষা পেলেও আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গুলিবিদ্ধ ওয়াসিম ওই বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী ও পার্শ্ববর্তী ইদিলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চকদাড়িয়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক আকন্দের ছেলে এবং গুলিবিদ্ধ সেলিনা বেগম একই গ্রামের আব্দুল মজিদের স্ত্রী। তাদেরকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গোলাপ প্রামানিক একই গ্রামের তয়েজ উদ্দিনের ছেলে। এবং কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গাইবান্ধা-০৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের সাবেক এমপি অ্যাড. উম্মে কুলছুম স্মৃতির বড় বোন পলাশবাড়ী পৌর শহরের বাসিন্দা লিনা বেগমের পালিত সন্তান হিসেবেও গোলাপ পরিচিত।
পলাশবাড়ী পৌর শহরের কালি বাড়ী বাজারের একাধিক ব্যবসায়ি ও স্থানীয়রা দাবী করেন, স্মৃতি এমপির বড় বোন ও সেকেন্দার হাজ্বীর পালক ছেলে বা তার বাড়ীর কাজের লোক হলো এই গোলাপ। এঘটনায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা কোন প্রকার যাচাই বাছাই না করে গোলাপকে সাবেক এমপি এ্যাড. স্মৃতি’র পিএস বা পালক ছেলে হিসাবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তুলে ধরায় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন সমাজ।
অস্ত্রধারী গোলাপ সম্প্রতি সে তার নিজ গ্রামে বসবাস করে স্থানীয় একটি চক্রের সাথে মাদক ও চোরাকারবারী বিভিন্ন ব্যবসাসহ নানান অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গোলাপ সঙ্গে দুইজনকে নিয়ে নাপিত বাজারে আবু বক্কর সিদ্দিকের হোটেলে চা-সিঙ্গারা খান। পরে দাম না দিয়ে চলে যাবার জন্য রওনা হন। এ সময় বাঁধা দিয়ে ওয়াসিম বাকি দেওয়া যাবে না বলে তাকে জানান। এবং আগের বাকী টাকাও পরিশোধের তাগাদা দেন। এ নিয়ে বাকবিতান্ডার হয় এর এক পর্যায়ে গোলাপ তার বাড়ীতে গিয়ে আবার এসে কোমর থেকে পিস্তল বের করে ওয়াসিমের রানে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ওয়াসিম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাকে উদ্ধার করতে সেলিনা বেগম এগিয়ে গেলে তার রানেও গুলি করে গোলাপ। এ সময় এলাকাবাসী এগিয়ে এলে ফাঁকা গুলি ছুড়ে তারা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ওসি তাজউদ্দিন খন্দকার গণমাধ্যমে জানান, গোলাপকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ঘটনার সময় তিনি পিস্তল, বন্দুক নাকি অন্য কোনো অস্ত্র ব্যবহার করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া তার কোন রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে।