একেএম বজলুর রহমান , পঞ্চগড়
মাহমুদুল হাসান। পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই দেবীগঞ্জ উপজেলাকে মডেল উপজেলা হিসেবে গগে তোলার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। নিজের দায়িত্বসহ এখন তিনি একের ভিতর চারে অবস্থান করছেন চার দপ্তরের প্রধান হিসেবে।
দেবীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান তার নিজ দপ্তরের পাশাপাশি আরও তিনটি দপ্তর দেখভাল করছেন। শত ব্যস্থতার মাঝেও কাজ করছেন চার দপ্তরের প্রধান হিসেবে। নিজের উপর অর্পিত সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি নিজেকে কখনো পিছপা হতে দেননি।
দেবীগঞ্জ উপজেলাকে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি বিভিন্ন পরিকল্পনাও তৈরি করেছেন।
দেবীগঞ্জ পৌরসভার ভিতরে স্মৃতিসৌধ নির্মানের জন্য কার্যক্রম গ্রহন করেছেন, দেবীগঞ্জ পৌরসভার মধ্যে নির্ধারিত কোন টার্মিনাল না থাকার কারনে একটি টার্মিনাল স্থাপনের জন্য প্রকল্প গ্রহন করেছেন। বিকেল বেলা অবসর জনিত সময় কাটানোর জন্য বিজয় চত্বরে এলইডি টিভি সংস্কারের জন্যও প্রকল্প গ্রগন করেছেন। বিজয় চত্বরকে আধুনিকায়ন করার জন্যও প্রকল্প গ্রহন করেছেন। বেকারদের প্রশিক্ষন ও কর্মশালা মাধ্যমে বেকারদের দক্ষতা প্রদানের জন্য প্রস্ফুটন সংঘ স্কিল ডেভেলপমেন্ট নির্মানের জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।
জুলাই আগষ্টের শহীদ সাজুর নামে একটি লাইব্রেরী স্থাপনের জন্য প্রকল্প নেয়া হয়েছে। দেবীগঞ্জ উপজেলার একমাত্র জিমনেসিয়ামটিকে আধুনিকায়নে সংস্থার করনের জন্যও প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। উপজেলার অফিসার্স ক্লাব সংস্কার ও সরঞ্জামাদির জন্য প্রকল্প গ্রহন করা হবে। উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষ আধুনিকায়ন করার জন্যও প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
উপজেলার চত্বরে দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা স্থাপনের জন্য প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, দেবীগঞ্জ উপজেলাকে মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে আমরা ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহন করেছি। এর মধ্যে ১০টি প্রকল্পে প্রাথমিক ভাবে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। আমরা প্রস্তাবনা দিয়েছি। অর্থ বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।
এছাড়াও তিনি জানান, দেবীগঞ্জ উপজেলার একমাত্র বিনোদনের জায়গা ময়নামতির চরকে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে ও শিশু কিশোরদের বিনোদনের জন্য পৌর সদরে একটি শিশু পার্ক স্থাপনের প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। এরজন্য প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। তবে প্রাথমিক বাজেট নির্ধারণ করা হয়নি।
এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দেবীগঞ্জ উপজেলার চিরচেনা রুপ বদলে যাবে।
মাহমুদুল হাসান একাধারে দেবীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, দেবীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি), দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের প্রশাসক ও দেবীগঞ্জ পৌরসভারও প্রশাসক হিসেবে কাজ করতেছেন। উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর তিনি অল্প দিনের মধ্যেই সাধারন মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। এজন্যই উপজেলার সাধারন মানুষেরা বিনা বাঁধায় নিজেদের বিভিন্ন সমস্যার কথা বলতে পারছেন তার নিকট। তিনিও শত ব্যস্ততার মাঝেও জনসাধারণের সেবা নিশ্চিত করছেন।
১৮ আগষ্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ সচিব মাহবুব আলম এর স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে পৌরসভার মেয়রদের অপসারন করা হয়। স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪ এর ধারা ৩২ (ক) প্রয়োগ করে পৌরসভার মেয়রকে অপসারন করা হয়।পৌর মেয়রকে অপসারণ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানকে পৌর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। নিজের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি দেবীগঞ্জ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছেন। পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজের তদারকি করছেন। নিয়ন্ত্রণ করছেন পৌরসভার অফিসের কর্মকান্ড। পৌরসভার নাগরিকদের নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে নিরলস ভাবে কাজ করছেন ইউএনও মাহমুদুল হাসান।
চার দপ্তরের কাজ শেষ করার পর দেবীগঞ্জ উপজেলার বি়ভিন্ন হাট বাজার মনিটরিং করছেন। অসাধু ব্যবসায়ীদেরকে জরিমানাও করছেন। বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করছেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অপসারন করা হয় গত বছরের ১৯ আগষ্ট। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেন স্থানীয় সরকার বিভাগ। উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪ এর ১৩ (ঘ) ধারা প্রয়োগ করে তাদেরকে অপসারণ করা হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগ এ নিয়ে আদেশ জারি করে। আদেশ জারি করার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন। দায়িত্ব গ্রহনের পর উপজেলা পরিষদের সার্বিক কার্যক্রম দেখভাল শুরু করেন। উপজেলার আওতাধীন দশটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যদের নিয়ে উপজেলা সার্বিক কাজ সম্পন্ন করে যাচ্ছেন। ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান দ্রুত করে দিচ্ছেন। ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক কাজ তদারকি করছেন। দেখভাল করছেন দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ। শতভাগ নিষ্ঠার সাথে তিনি নিজের দায়িত্ব কাজ করছেন।
দেবীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তুরাব আলী উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের জন্য বিদেশে অবস্থান করছেন। যার কারনে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে জনগণের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার ১০ ইউনিয়নের জনসাধারণের জায়গা জমি নিয়ে বিরোধের মিমাংসা করে দিচ্ছেন। বিভিন্ন ব্যক্তির অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সমাধান করে দিচ্ছেন কোন পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই।
ইউএনও মাহমুদুল হাসানের ন্যায় বিচার ও দক্ষতা নিয়ে বিচার প্রার্থী ও সাধারণ মানুষেরা তাকে ভিন্ন মাত্রায় দেখছেন।
মাহমুদুল হাসান আরও বলেন, চার দপ্তরের দায়িত্ব পেয়ে চেষ্টা করছি সাধারন মানুষকে তাদের কাংখিত সেবা দেয়ার জন্য। সেবা নিতে আসা সাধারন মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হন সেদিকে লক্ষ রেখেই কাজ করে যাচ্ছি।