সাজিদ হত্যার বিচার-সহ ১৫ দফা দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
																																		ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্বদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যার বিচার, সেশনজট নিরসন, ছাত্র সংসদ গঠন, ডিজিটালাইজেশন ও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ ১৫ দফা প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সাজিদ হত্যার বিচার নিশ্চত করা ও আগামী ৭ দিনের মধ্যে ইকসু গঠনের রোডম্যাপ প্রদানের আল্টিমেটাম দেন।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে “ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলন” প্লাটফর্মে প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে তারা।
মানববন্ধনে তাদের হাতে “সংস্কার ছাড়া প্রশাসন, কেবলমাত্র প্রহসন; ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চাই, বহিরা গতমুক্ত পরিবেশ চাই; আমরা আশ্বাসে নয়, বাস্তবায়নে বিশ্বাসী; চিকিৎসায় অবহেলা নয়, মেডিকেলে পর্যাপ্ত ঔষধ চাই; এনালগের শিকল ভাঙ্গো, ডিজিটাল ক্যাম্পাস গড়” ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী খন্দকার আবু সাঈম  সাজিদ আবদু্ল্লাহ’র খুনিদের বিচারের বিষয়ে  বলেছেন, সিআইডি’কে একটি তদন্তভার দিতে কী ২ মাস লাগে? আমরা দেখেছি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মা-মেয়ে দুজনই খুনের তিন দিনের ভেতরে খুনি ধরা পড়েছে কিন্তু ইবিতে হত্যার দুইমাস হয়ে গেলেও কোনো আশাব্যঞ্জক কথা শুনতে পাইনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নওশীন বলেন, সাজিদ হত্যার খুনিদের তদন্ত করে খুঁজে বের করে বিচার করা হলো না, তবে আমরা কীভাবে নিজেদের নিরাপদ মনে করবো? যেখানে ছেলেরাই নিরাপদ নয় সেখানে মেয়েরা কীভাবে নিজেদের নিরাপদ মনে করবেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সহস্র শহীদের রক্তস্নাত জুলাই বিপ্লবের এক বছর অতিবাহিত গেলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে যৌক্তিক দাবি পেশ করলেও, প্রকৃতপক্ষে তা বাস্তবায়ন হয়নি।
তারা আরও বলেন, আমাদের দাবির মধ্যে অন্যতম দাবি হলো সেশনজট নিরসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জুলাই শহিদদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আছে তারপরও কোনো সংস্কার প্রক্রিয়া দেখিনি। নভেম্বর মধ্যেই ইকসু পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এবং আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে ইকসু বাস্তবায়নের রোড ম্যাপ দেখতে চাই।
তারা বলেন, আমরা চাই অতিদ্রুত আমাদের ১৫ দফা দাবিগুলো পূরণ করা হোক। এর আগেও যারা স্যারের কাছে দাবি জানিয়েছে, স্যারেরা শুধু আশ্বাস দিয়েছে। সেই আশ্বাসের উপরেই আছি আমরা। ৯ সেপ্টেম্বরে আমরা যখন আমাদের স্মারকলিপি জমা দেয়, একই ভাবে আমাদের আশ্বাস দেন যে, আমরা কাজ করছি এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারবো। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে এক বছর হয়ে গেলও সেই দ্রুত সময়টা কখনো তাৎক্ষণিক সময়ে আসতে পারলো না।
প্রসঙ্গত, “ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলন” বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্রিয়াশীল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, সেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সকল বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে যৌক্তিক দাবি আদায়ে গঠিত একটি প্লাটফর্ম। তারা গত ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ১৫ দফা দাবিতে স্মারকলিপি জমা দেয়।
উত্থাপিত দাবি সমূহ হলো: সেশন জট নিরসন, সাজিদ হত্যার বিচার, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ছাত্র সংসদ গঠন, ডিজিটালাইজেশন, আবাসন সংকট নিরসন, চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়ন, হলের খাবারের মান বৃদ্ধি, ফ্যাসিবাদের বিচার, পরিবহন সংকট, সর্প নিয়ন্ত্রণ, প্রতি বিভাগে ছাত্রীদের কমনরুম নিশ্চিতকরণ, প্রতিটি হল ও বিভাগে ফার্স্ট এইড বক্স রাখা, নতুন শিক্ষার্থী ভর্তিতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু এবং সাইবার বুলিং বন্ধে নীতিমালা প্রণয়ন।
                                    
        
                        
                        
                            
