কাশফুলে সাজলো জামালপুরের ব্রহ্মপুত্র তীর
ফারিয়াজ ফাহিম
জামালপুর
শরতের আগমনী বার্তা নিয়ে সাদা কাশফুলে সেজেছে জামালপুরের ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন স্থানীয় মানুষ আর পথচারীরা।
বর্ষার পর পরই যেন লুকিয়ে আসে শরৎ।কর্মব্যস্ত শহরে জীবনে দম ফেলার ফুসরত সময় নেই কারো।যান্ত্রিক জীবনের কোলাহল ফেলে একান্তই একটু সুন্দর সময় কাটাতে চায় অনেকে।
বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ । ভাদ্র ও আশ্বিন এ দু’মাস মিলে শরৎ কাল। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে সেপ্টেম্বর মাসে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে মার্চ মাসে শরৎকালের আগমন হয়। এ সময় রাত তাড়াতাড়ি আসে এবং আবহাওয়া ঠান্ডা হতে থাকে। শরতে হিমঝুরি, গগনশিরীষ, ছাতিম, পাখিফুল, পান্থপাদপ, বকফুল, মিনজিরি, শেফালি, শিউলি, কাশফুলসহ ইত্যাদি ফুল ফুটতে দেখা যায়।
মানুষ কতই না মুগ্ধ হয় নীল আকাশের মাঝে কখনো কালো মেঘে আবার কখনো সাদা মেঘের আবরণে লুকিয়ে হাসা সোনালি সূর্য আর তারই সঙ্গে বাতাসে শুভ্র সাদা কাশফুলের দোলানো দেখে। বাতাস এলে ফুলগুলো একসাথে দোল খায়। সে দৃশ্য কতই না মনোরম!
খাল-বিল কিংবা নদীর পাড়, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের কোনো উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। নদীর তীরে পলিমাটির আস্তর থাকে। এই মাটিতে কাশের মূল সহজে সম্প্রসারিত হতে পারে। তাই নদীর তীরেই কাশফুল বেশি দেখা যায়।
জেনে রাখুন-
(কাশফুল একধরনের বহুবর্ষজীবী ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ।এর বৈজ্ঞানিক নাম Saccharum spontaneum এরা উচ্চতায় সাধারনত ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।নদীর তীরে ফুলফোটা শ্বেতশুভ্র কাশবন দেখতে খুবই সুন্দর। এর আদিবাস রোমানিয়া)
রাফিয়া জানান শরৎ কাশফুলের সৌন্দর্য নিয়ে প্রকৃতিতে আগমন করে। আকাশে সাদা মেঘের ভেলার সাথে সাদা কাশফুলে নিজেকে হারিয়ে ফেলি বারবার। শতো মন খারাপ থাকলেও শরৎ এর ঠিক বিকেল বেলায় কাশবনে আসা মাত্রই মনটা হারিয়ে যায় সাদা মেঘের ভেলায় ও শুভ্রতার সাথে।
কাশফুলে সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসে আদি ও রিমি দম্পতি জানান,শরৎ মানেই নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। হুট করে ঝুম বৃষ্টি। বিশেষ করে নদীর পাড় ঘেঁসে সাদা কাশফুলের মেলা দেখতে অনেক ভালো লাগে।
গন্ধহীন এই ফুলের মোহ মনের কোনে এক বিশেষ জায়গা করে নেয়। বিকেল বেলা নীল রঙা শাড়ি পাঞ্জাবীতে ব্রম্মপুত্র নদীর ধারে কাশফুলের মেলায় মন এক নতুন দিগন্ত খুঁজে পায়। এই অল্প বিস্তর প্রকৃতির সাথে কাটানো সময় যেনো কালের সাক্ষী হয়ে রয়ে যায় এক বছরের জন্য।বছর ঘুরে আবারো অপেক্ষা শুভ্র সাদা কাশফুলের।
অফিস সময়ে ব্যস্ততার জন্য আমাদের বের হওয়াই হয় না।তাই ছুটির দিনে বিকেল বেলা ঘুরতে চলে এসেছি দুজনে মিলে।
পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসে আরিফ জানান, অফিসের ব্যস্ততার ফাকেই পরিবার নিয়ে শরৎ কালের কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আমার পরিবার নিয়ে এসেছি।আমার ছোট ছেলে মেয়ে এরকম সুন্দর দৃশ্য দেখে অনেক খুশি হয়েছে। আমরা কাশফুলের সাথে বিভিন্ন লুকে ফ্রেমবন্দি হয়েছি।
ভাদ্র-আশ্বিনের প্রকৃতিতে শরৎ আকাশজুড়ে নরম সাদা মেঘের ভেলা হয়ে ঘুরে বেড়ায় পালতোলা নৌকার মতো, হেমন্তের কার্তিকেও শরতের রেশটুকু যেন শেষ হতে চায় না।ঠিক তেমনি শরৎ এর কাশফুলের সময়টুকুও প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের মন থেকে শেষ হতে চায় না।বছর ঘুরে এই মাসটির জন্য অপেক্ষার প্রহর তারা গুনে যায়।।