পঞ্চগড়ে এনআইডি জালিয়াতি করার অভিযোগে মোস্তফা ও জালাল হাজতে

একেএম বজলুর রহমান, পঞ্চগড়
পঞ্চগড়ে এনআইডি জালিয়াতি করার অভিযোগে দুইজনকে হাজতে পাঠিয়েছে আদালত। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বোদা আমলী আদালতের বিচারক এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী মো.রাকিবুত তারেক বলেন, এজাহার ভুক্ত দুইজন আসামী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
আসামীরা হলেন দেবীগঞ্জ টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের কাদেরের মোড় এলাকার মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে মোস্তফা কামাল (৪২) ও বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের নতুন বস্তি এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে জালাল হাজী (৫৫)।
জানা গেছে, ভারতীয় নাগরিক জালিয়াতি করে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র করার অভিযোগে একাধিক পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশের পর দেবীগঞ্জের নাজমুল ইসলাম বাপ্পি সংবাদের কাটিংসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করে। তার পেক্ষিতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্মারকে পুলিশ হেড কোয়াটার্স, ঢাকার স্পেশাল ব্রাঞ্চ বিষয়টি অনুসন্ধান পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বোদা থানায় পাঠানো হয়। পরে বোদা থানার অফিসার ইনচার্জ, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রেজওয়ানুল হক মন্ডলকে দায়িত্ব দেন। তদন্ত করে তিনি গত ২৫ আগস্ট ভারতীয় দুইজনসহ ৯ জনের নামে মামলা দায়ের করে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় ভবেন্দ্র নাথ রায় প্রধান (৭৫) এবং বজেন্দ্র নাথ রায় প্রধান (৭১) তাদের পৈত্রিক বাড়ী ছিল পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ গাজকাটি খারিজা ভাজনি গ্রামে।তাদের পিতা মৃত জলধর রায় প্রধান এলাকার সম্পদশালী ব্যক্তি ছিলেন। স্বাধীনতার পূর্বে মৃত জলধর রায় টেপ্রীগঞ্জ এবং শালডাংগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। মৃত জলধর রায়ের তিন ছেলে এবং এক মেয়ে। সম্পত্তির বিরোধে জলধর বায়কে হত্যা করলে তার তিন ছেলে ভারতে চলে যায়।
মৃত জলধর রায়ের মেয়ে মৃত কুলবালা রায় ওরফে শ্রী নমিতা রানী রায় এর সাথে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জর উপজেলার সোনাহার ইউনিয়নের মৃত মনি ভূষণ রায় এর সাথে বিয়ে হয়। মৃত নমিতা রানী রায় মৃত্যু কালে এক ছেলে দুই মেয়ে রেখে যায়। তার একমাত্র পুত্র উত্তম কুমার রায় ওয়ারিশ সূত্রে জলধর রায়ের বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়। পরবর্তীতে সম্পত্তি বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট বিক্রি করে। হেলাল শেখ, মুসলিম উদ্দিনসহ ১৭ জনের কাছে মোস্তফা কামাল ২০২২ সালে জমি লিজ নিয়ে ফসল উৎপাদন করে। পরবর্তীতে মোস্তফা জানতে পারে জলধর রায়ের পুত্র ভবেন্দ্র নাথ রায় প্রধান ও ব্রজেন্দ্র নাথ রায় প্রধান এর পৈত্রিক সম্পত্তি। মোস্তফা কামাল তাদের সাথে যোগাযোগ করে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া জমি বিক্রি করতে না পারায়।মোস্তফা তার মামাত ভাই জালাল হাজীর সঙ্গে মিলিত হয়ে মাড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী নুর ইসলাম, পিয়ন মজনু, গ্রাম পুলিশ দীনবন্ধু মিলে জনৈক দুই ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরীর জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসে কাগজ পত্র দাখিল করলে জাতীয় পরিচয়পত্র হয়।