মাদারীপুরে বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষ, সাংবাদিক–পুলিশসহ আহত ১৫
সাব্বির হোসাইন আজিজ, মাদারীপুরঃ মাদারীপুরের কালকিনিতে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দুগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে সাংবাদিক, পুলিশ কর্মকর্তা ও সাধারণ কর্মীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা চত্তরে মনোনয়নপ্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত মেজর রেজাউল করিমের কর্মী–সমর্থকদের ওপর প্রতিপক্ষ আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনের সমর্থকদের হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ( অব:) মেজর রেজাউল করিম এর নেতৃত্বে একটি পথসভা শেষে তার সমর্থকরা কালকিনি উপজেলা চত্বরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফ উল আরেফিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। এ সময় অফিস ভবনের নিচে অবস্থানরত রেজাউল করিমের সমর্থকদের ওপর হঠাৎ খোকন তালুকদারের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে কালকিনি উপজেলা চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষের ঘটনা দেখতে পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসেন। পর কালকিনি থানার ওসিসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে রয়েছেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ওসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সাংবাদিক শাহ্ জালাল , সবুজ খান, মেজর রেজাউল করিমের ভাই বিএম যাচ্ছু মিয়া, কর্মী সাজ্জাদ হোসেন, আরিফুল ইসলাম, আরিফ বেপারীসহ অন্তত ১০ জন। অপরদিকে খোকন তালুকদার গ্রুপের ছাত্রদল নেতা তুহিনসহ আরও দুজন আহত হন।
আহতদের মধ্যে রেজাউল করিম গ্রুপের তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিদের মাদারীপুর সদর হাসপাতাল ও কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে রেজাউল করিমের সমর্থকদের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় খোকন গ্রুপের লোকজন। পরে রেজাউল সমর্থকরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এর পর খোকন তালুকদারের সমর্থকরা আবারও সংঘবদ্ধ হয়ে চাইনিজ কুড়াল, লাঠিসোটা ও পাথরসহ হামলা চালায়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর কালকিনি উপজেলা জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে সংঘর্ষের বিষয় বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই প্রার্থীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মোবাইলে ফোন দিলেও রিসিভ করেনি তারা।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাতক চাকমা বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্যে ঘটনাস্থলে আসি। তবে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে আমিসহ দুইজন আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে যে কোন সময়ে আবারো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। পুলিশ প্রস্তুত আছে।
এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফ উল আরেফিন বলেন, রেজাউল সাহেব বেশকিছু লোকজন নিয়ে উপজেলা চত্বরে মিছিল করছিলেন। আমি গিয়ে তাকে অনুরোধ করে আমার রুমে নিয়ে আসি। পরবর্তীতে কিছু লোকজন এসে তাদের উপর হামলা করে।





