সাজিদ হত্যার ৯০ তম দিন; বিচার বিলম্বিত হওয়ায় ইবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ’র হত্যার ৯০ দিন হয়ে গেলেও হত্যাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতার না করায় অভিনব পদ্ধতিতে প্রতিবাদে করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় একটি বোর্ডে হত্যার অতিবাহিত দিন সংখ্যা উল্লেখ করেন প্রদর্শন করে তারা।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচিতে ইবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের ৯০ দিন অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় এবং পুলিশ প্রশাসনের কোন অগ্রগতি দেখাতে পারেনি।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখানে ব্যর্থ হয়েছে। সাজিদের খুনিদের যখন গ্রেফতার করা হবে তখনই আমরা প্রশাসনকে সফল বলবো’।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সাজিদের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। সাধারণ শিক্ষার্থী এবং রাজনৈতিক সংগঠনের শিক্ষার্থী সকলেই যার যার জায়গা থেকে এই আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ- যেনো পুলিশ প্রশাসন খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সামনে নিয়ে আশা।’
ইবি শিক্ষার্থী বুরহান উদ্দিন বলেন, ‘জুলাই মাসের ১৭ তারিখে সাজিদের লাশ আমরা পুকুরে পাই। পরবর্তীতে ডাক্তারের মেডিকেল রিপোর্টের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। আজ তার ৯০তম দিন। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, নব্বই দিন হয়ে গেলেও প্রশাসনের তেমন কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। বরং যত দিন যাচ্ছে, আমরা দেখছি যে সাজিদ হত্যার ইস্যুটা ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইসমাইল রাহাত বলেন, ‘৯০ দিন অতিক্রম হয়ে গেলেও প্রশাসন এখনো কোন খোঁজ খবর পাননি। আজকের এই অভিনব প্রতিবাদটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, ‘এরপর আর কেউ টার্গেটে আছে কি-না’? এটা আমাদের নিরাপত্তার প্রশ্ন। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি, যেটি আমাদেরকে ভাবিয়ে তোলে। আমরা সাজিদ হত্যার বিচার হওয়া দরকার বলে মনে করি।
ইবি শিক্ষার্থী ইসতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, আজকে এমন একটি বোর্ড প্রদর্শন করা হয়েছে যে বোর্ডটি আমাদেরকে দেখাচ্ছে সাজিদ হত্যার ইস্যুটা কতটা বিলম্বিত হচ্ছে। এই সতর্কতা আমাদের জন্য খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, তা ঠিক কতদিন পর্যন্ত ভুগবো? কতদিন পর সাজিদের এই হত্যার ব্যাপারটা সবার সামনে আসবে? কতদিন পর আমরা বিচার পাব? এ সংশয় থেকেই আজকে আমাদের এই কার্যক্রম।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন বোর্ডে থাকা তারিখ পরিবর্তন করবো। প্রতিদিন আমাদের কর্মদিনটা পরিবর্তন হবে এবং যতদিন বাড়বে এক সংখ্যা থেকে দুই সংখ্যা, দুই সংখ্যা থেকে তিন সংখ্যা।আমার মনে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী যখনই দেখবে যে সংখ্যাটি দিন- দিন বাড়ছে ঠিক তখনই শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারবে, আসলে সাজিদ হত্যার পিছনে কতটুকু ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের, কালক্ষেপন ও নিরাপত্তাহীনতার ব্যাপারগুলো সকলের সামনে তুলে ধরার জন্যই আমরা এখানে সমবেত হয়ে এই বোর্ড এখানে উপস্থাপন করেছি।’
উল্লেখ্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন সাজিদ আবদুল্লাহ। গত ১৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেলে শাহ আজিজুর রহমান হলের (সাবেক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল) পুকুর থেকে সাজিদের লাশ ভাসতে দেখা গেলে পরে উদ্ধার করেন একদল শিক্ষার্থী।
পরবর্তীতে ফরেনসিক রিপোর্টের আলোকে জানা যায়, সাজিদ আবদুল্লাহকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর তার মৃতদেহ পানিতে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে এই মামলাটি সিআইডি’র নিকট তদন্তাধীন।