দুদকের অধিকতর তদন্তে চসিকের সাবেক কর্মকর্তাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

ইসমাইল ইমন চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) একটি উন্নয়ন প্রকল্পে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে দুদকের অধিকতর তদন্ত শেষে চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
ইমপ্রুভমেন্ট পোর্ট কানেকটিং রোড প্রকল্পের (অলংকার থেকে নিমতলা পর্যন্ত) কাজে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন ও জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে এ চার্জশিট দাখিল করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. বেনজীর আহম্মদ।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন—
১. কুমিল্লার ঝাউতলার বাসিন্দা ও মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাকির হোসেন,
২. ইউসিবিএল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের তৎকালীন স্পেশাল অ্যাসেটস ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের কর্মকর্তা মো. সরোয়ার আলম,
৩. চসিকের তৎকালীন প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, এবং
৪. এনআরবি ব্যাংক কুমিল্লা শাখার তৎকালীন এভিপি ও শাখা প্রধান মোহাম্মদ তোফায়েল।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১০ মে দুদকের উপপরিচালক মো. আনোয়ারুল হক এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে চসিকের উক্ত প্রকল্পে আর্থিক অনিয়ম ও সরকারি ক্ষতি সাধন করেন।
প্রকল্পের কার্যাদেশ পাওয়ার পর নিয়মিত প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে অবৈধভাবে ‘আমমোক্তার’ নিয়োগের মাধ্যমে কাজ হস্তান্তর এবং অসমাপ্ত অবস্থায় প্রকল্প বন্ধ রাখার কারণে সরকারি ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয় বলে দুদকের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, আসামি মো. জাকির হোসেন নিজেকে “রানা বিল্ডার্স অ্যান্ড সালেহ আহম্মেদ”-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর পরিচয়ে ইউসিবিএল কুমিল্লা শাখার মাধ্যমে প্রায় ২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেন। এই প্রক্রিয়ায় ব্যাংক কর্মকর্তারা সরাসরি সহযোগিতা প্রদান করেন।
এর আগে মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষে দুদক একবার চার্জশিট দাখিল করলেও আদালত অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে নতুন তদন্তে আরও তথ্য উদঘাটিত হওয়ায় হালনাগাদ চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে দুদকের তদন্তাধীন এবং বর্তমানে চসিক প্রশাসনের সঙ্গে এর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রকল্পের সব আর্থিক কার্যক্রম ছিল তৎকালীন কর্মকর্তাদের সময়কার। বর্তমান প্রশাসন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি প্রকল্পে কঠোর আর্থিক তদারকি ও পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।