সিরাজগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেই রক্তপাত জেলা ছাত্রদল সভাপতি সবুজের বিরুদ্ধে মামলা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি.
সিরাজগঞ্জে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়াকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে এক যুবদল কর্মীর ওপর নৃশংস হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কর্মীর মাথা ও কোমরের হাড় ভেঙে গেছে বলে জানা গেছে। হামলার মূল হোতা হিসেবে সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ হোসেন সবুজকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ন্যক্কারজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপিতে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, রাত আনুমানিক ৯টার দিকে সিরাজগঞ্জ শহরের গোবিন্দ খান সাহেবের মাঠের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত মো. হৃদয় (২৫) বর্তমানে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত হৃদয়ের বাবা মো. হান্নান বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় দায়ের করা এজাহারে উল্লেখ করেন, তার ছেলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুবদলের একটি মিছিলে অংশগ্রহণ করেছিল। এর জের ধরে ওইদিন রাতে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ হোসেন সবুজের নেতৃত্বে একদল যুবক হৃদয়ের পথরোধ করে। এজাহারে অভিযুক্ত হিসেবে জুনায়েদ হোসেন সবুজ (৪২) ছাড়াও মো. শাওন (২৮), মো. শরীফ (৪৪), মো. সোহানুর রহমান সোহাল (৩৪), মো. তামজীদ (২০), মো. শিবলু (৩০), মো. রাজু (৪০), মো. সজীব (৩২) এবং আরও ৪-৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, আসামিরা লোহার রড, ধারালো রামদা এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে হৃদয়ের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের সম্মিলিত আক্রমণে হৃদয়ের মাথার খুলি এবং কোমরের হাড় ভেঙে যায়। এসময় হৃদয়কে বাঁচাতে এগিয়ে এলে স্থানীয় যুবক নাহিদ, সংগ্রাম, তুষার ও জলিলকেও মারধর করা হয়। হামলাকারীরা নাহিদের কাছে থাকা ১৫ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর বাবা হান্নান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, শুধুমাত্র দলের একটি মিছিলে যাওয়ার কারণে আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে এভাবে মারা হয়েছে। আমি এই সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির অভ্যন্তরে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মী জানান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ হোসেন সবুজের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই নানা অনিয়ম, আধিপত্য বিস্তার এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগ ছিল। দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিজ দলের কর্মীর ওপর এমন বর্বরোচিত হামলা তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেরই বহিঃপ্রকাশ। এই কঠোর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে এবং তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এবং অভিযুক্তদের দল থেকে বহিষ্কারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেসুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


