সারাদেশ

চট্টগ্রামে মোতোয়াল্লী আব্বাস উদ্দিনের পরিবারের সদস্য কর্তৃক মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম নগরীর তোফাজ্জল আলী ওয়াকফ এস্টেট (ইসি নং ২৩২৩) এর ফ্যাসিস্ট মোতোয়াল্লী আব্বাস উদ্দিন চৌধুরী’র মেয়ে সেলিনা আক্তার কর্তৃক স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে৷ যা বিভিন্ন অনলাইন টিভি ও পোর্টালে প্রচারিত হয়। কথিত সংবাদ সম্মেলনে প্রদানকৃত মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানাধীন শুলকবহর এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রতিবাদলিপিতে তিনি বলেন, “গত ১৯ অক্টোবর রবিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সেলিনা আক্তার স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য পরিবেশন করে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন আমি নাকি স্বর্ন ব্যবসায়ী এবং আমাকে ব্যাঙ্গ করে স্বর্ন খোকন নামে উল্লেখ করেন। আমি আন্তর্জাতিক লাইসেন্সদারী একজন ব্যবসায়ী এবং এই বক্তব্যগুলো আমার জন্য অসম্মানজনক ও মানহানিকর। আমি সম্মানের সাথে বিগত ৩২ বছর যাবত বাংলাদেশ ও আরব আমিরাত (দুবাই) এ মোটর পার্টস, হার্ডওয়্যার, এস্প্যায়ার পার্টস ও ওয়ার্কসপের ব্যবসা করে আমার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ সরকারকে লক্ষ লক্ষ টাকা রেমিট্যান্স প্রদান করে আসছি। আমার স্ত্রী সন্তান সকলেই আরব আমিরাতে (দুবাই) আমার ব্যবসাস্থলে পড়ালেখার সুবাধে বসবাস করে।
উক্ত প্রদানকৃত মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতা ও চট্টগ্রাম মহানগরস্থ পাঁচলাইশ থানা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি আব্বাস উদ্দিন চৌধুরী’র মেয়ে সেলিনা আক্তার বলেন, আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। মূলত তাহার বক্তব্যটি ঢাহা মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি এবং আমার পরিবারের কোন সদস্যই কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নয় এবং ছিলাম না। শুধুমাত্র মিথ্যা অপবাদ দিয়ে উক্ত আব্বাস উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সমূহ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা মাত্র। এ যেন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা। মূলত এই আব্বাস উদ্দিন চৌধুরী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে আমার পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীকে জামাত-বিএনপি ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন দমন নিপীড়ন করে আসছিল। উক্ত আব্বাস উদ্দিন চৌধুরী স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোষর। তিনি কেন্দ্রীয় ও মহানগরে আওয়ামী লীগের বড়বড় নেতাদের সাথে নিজের ছবি তুলে সামাজিক গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন উপায়ে ফায়দা লুটে নিজের আখের গুছায়। আওয়ামী লীগ আমলে সকল প্রহসনের নির্বাচনকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থীর জন্য তার বাড়ীর আঙ্গীনায় উঠান বৈঠক দলীয় মতবিনিময় সভা আয়োজন করেন। এইসব কর্মকাণ্ডের ছবি সামাজিক গণমাধ্যমসহ পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয় যার প্রমান সংরক্ষিত রয়েছে। বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি সরকার, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিশেষ সুপারিশে চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচলাইশ থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতি মনোনীত হন। উক্ত আব্বাস উদ্দিন চৌধুরী আওয়ামী লীগের শাসন আমলে পাঁচলাইশ থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর পদ ব্যবহার করে এলাকার বিএনপি জামাতের নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগনকে মামলা-হামলার মাধ্যমে নির্যাতন করে আসছিলেন। তার কারণে অনেক নিরীহ মানুষ ঘরে থাকতে পারেনি।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আন্দোলনকারী ছাত্র জনতার উপর হামলার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানার মামলা নং-২১(১০)২৪ রুজু হয় এবং সে এজাহার নামীয় ৫৪ নং আসামী। এজাহারে তার আসামীর নামের সাথে মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা উল্লেখ করা হয়। বিগত আওয়ামী লীগ আমলে সে বিভিন্ন প্রহশনের নির্বাচনে নৌকা মার্কার সমর্থনে প্রার্থীদের প্রধান এজেন্টের ভূমিকা পালন করে এবং তার বাড়ির আঙ্গিনায় বিভিন্ন সময় নির্বাচনী উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এই আব্বাস উদ্দিন চৌধুরী আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ার সুবাদে ওয়াকফ এস্টেটের জায়গা দখল করে অবৈধ ভাবে ওয়াকফ জায়গা বিক্রি , চাঁদাবাজী, লুটপাট সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র মানিক চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে যাকে প্রতিবন্ধী হিসেবে দেখানো হয়েছে এস্টেট এলাকায় খবর নিলে জানা যাবে উক্ত এস্টেটের সকল কার্যক্রম উক্ত মানিক চৌধুরী ও তার দুই ভাই রুবেল চৌধুরী এবং জনি চৌধুরী দেখাশোনা করেন এবং তারা উক্ত এস্টেটের ওয়ারিস আওলাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এস্টেট এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে রেখেছে। সম্প্রতি উক্ত এস্টেটের এলাকা হতে পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁও থানার বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে গত ১০ অক্টোবর বিপুল পরিমান অস্ত্র, গোলাবারুদ, ইয়াবা, গাজা ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও সম্প্রতি আরো বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালিত হয়।
তার সন্ত্রাসী ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে স্থানীয় ছাত্র জনতার পক্ষে প্রধান উপদেষ্টাসহ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবরে তার নাম উল্লেখ করে অভিযোগ প্রদান করা হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক সিএমপি কমিশনারকে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। বর্তমানে সিএমপি ও গোয়েন্দা সংস্থার তত্ত্বাবধানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে মর্মে এলাকাবাসীর মাধ্যমে জানতে পারি।
আমার প্রশ্ন হলো তিনি যদি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত না হন তাহলে সরকার পতনের পরবর্তীতে অর্থাৎ ৫ আগষ্ট /২৪ হতে তিনি পুলিশের হাত থেকে বাচার জন্য নিজেকে আত্নগোপনে কেন রেখেছেন? পুলিশ সূত্রে জানতে পারি যে, উল্লেখিত মামলাটি এখনও তদন্তাধীন অর্থাৎ পুলিশ উক্ত মামলায় চার্জশিট প্রদান করা হয়নি। যার ফলে হলফনামার কোন ভিত্তি নাই এবং অদ্যাবধি তার মামলা থেকে অব্যহতি পাওয়ার কোন সুযোগও নেই। উক্ত আব্বাস উদ্দিন চৌধুরী তার নিজের দোষ গোপন করার জন্য আমার নামে ঢাহা মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন এবং আমার মেয়ে ও তার শশুরগোষ্টির নামও ছবি ব্যানারে ব্যবহার করে মানহানি করা হয়েছে যা খুবই দুঃখ জনক। সাংবাদিক সম্মেলনের ব্যানারে একটি মেয়ের বিয়ের ছবি দেওয়া কতটুকু হীন মনমানসিকতার বহিঃপ্রকাশ এবং মানহানিকর তা বলার অবকাশ রাখে না। এটি একটি দন্ডনীয় অপরাধও বটে। আমার মেয়ের স্বামী একজন হাইকোর্ট বিভাগের বিজ্ঞ আইনজীবী এবং তার শশুর শারীরিক ভাবে অসুস্থ বয়স্ক ব্যক্তি। ব্যানারে উল্লেখিত আমার মেয়ের স্বামী ও শশুর তোফাজ্জল আলী ওয়াকফ এস্টেটের কোন প্রকার আওলাদ/ওয়ারিশ/মুসল্লী নন। এদের নামে চরিতার্থ মিথ্যা তথ্যের সাথে আমার মোতোয়াল্লী নিয়োগের আবেদনের কোন প্রকারের সম্পৃক্ততা নাই। তাছাড়া উক্ত এস্টেটের অপর ওয়ারিশ রিয়াজুল ইসলাম চৌধুরী সজিব বর্তমান ফ্যাসিস্ট মোতোয়াল্লীর বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তাকেও ফ্যাসিস্টের ট্যাগ লাগানোর অপচেষ্টা করা হয়। আমি আগামী অতিদ্রুততম সময়ের মধ্যে আমাকে নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য পরিবেশন ও আমার আত্মীয় স্বজনকে নিয়ে মানহানীর তথ্য প্রচারের দায়ে আমি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উল্লেখ্য, যে ফ্যাসিস্ট মোতোয়াল্লী আব্বাস উদ্দিন চৌধুরী গং আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ইতিপূর্বে ফৌজদারি আদালতে সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেছি। অদূর ভবিষ্যতে আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের জীবনক্ষয়সহ কোনরূপ ক্ষতিসাধান হলে আব্বাস উদ্দিন চৌধুরী গং দায়ী থাকবে। পরিশেষে প্রিয় সাংবাদিক ভাইদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ করে বলছি এইরূপ ঢাহা মিথ্যা বানোয়াট ভুয়া সংবাদ পরিবেশন হতে বিরত থেকে আব্বাস উদ্দিন চৌধুরীর অবৈধ কর্মকাণ্ড অনুসন্ধান করে সঠিক সংবাদ তুলে ধরার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করছি।”

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

সারাদেশ

মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক হলেন সাব্বির আহমেদ সামাদ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে প্রচার সম্পাদক পদে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার একনিষ্ঠ ও ত্যাগী ছাত্রনেতা সাব্বির আহমেদ সামাদ।
সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,