দুই ভাইয়ের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্ব,দুর্নীতির বিষয় প্রকাশ্যে
জাহিদুল ইসলাম (জাহিদ) স্টাফ রিপোর্টার।
দীর্ঘদিন ধরে দুই ভাইয়ের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এনিয়ে একাধিক মামলা ও মোকাদ্দমাও হয়েছে। এরমধ্যেই এক ভাইয়ের দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান করে তাঁর জ্ঞাত আয়–বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পায়। দুদকের সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নওশাদ আলী বাদী হয়ে গত বছরে তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত ওই স্থাবর সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) রিসিভার হিসেবে দেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দীপুর ইউনিয়নের কানুপুর গ্রামে ফজলুর রহমানের তিন বিঘা ২৫ শতাংশ আবাদি জমির দখল বুঝে নেন।
জ্ঞাত আয়–বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠা ফজলুর রহমান যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে এক্সামিনার অব অ্যাকাউন্টস পদে কর্মরত ছিলেন। চলতি বছরে জানুয়ারিতে তিনি অবসরে গেছেন।তাঁর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা চলমান রয়েছে। ফজলুর রহমানের দাবি, তিনি বৈধ আয় সম্পদ অর্জন করেছেন। আয়কর রির্টান ফাইল দাখিলের সময় জমিগুলো ভূলক্রমে দেওয়া হয়নি। জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্বে তাঁর বড় ভাই শফিউল ইসলাম এমন কাজ করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। তবে তাঁর বড় ভাই শফিউল আলম বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
দুদকের সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মেহেবুবা খাতুন বলেন, তিনি চাকুরিতে কর্মরত অবস্থায় ১৯ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৬ টাকার স্থাবর সম্পত্তি ও ৮০ লাখ ১৫ হাজার ২৬ টাকা সম্পদ জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন করেন। এ ঘটনায় দুদক মামলা করলে আদালত তার জয়পুরহাটের বাড়ি ও আক্কেলপুরের তিন বিঘা ২৫ শতক জমি ক্রোক করে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ইউএনওকে দেন। আজ বৃহস্পতিবার ইউএনও কানুপুর মাঠের জমিগুলো দখল বুঝে নিয়েছেন। মামলার চার্জশিট প্রস্তুত হয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়টি অস্বীকার করে ফজলুর রহমান বলেন, আমার সব বৈধ সম্পদ। আয়কর রির্টান দাখিলের সময় ভূলক্রমে জমিগুলো ফাইলে তোলা হয়নি। আমাদের ভাইদের মধ্যে জমি-জমা নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এসুযোগে বড় ভাই শফিউল আলম আমার ক্ষতি করেছে।
শফিউল আলম বলেন, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে-এটি সত্য। তবে আমার পরিবারের কেউ দুদকে অভিযোগ করেনি। দুদক আমার ছোট ভাই ফজলুর রহমানের জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ পেয়েছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবিদা খানম বৈশাখী বলেন, ফজলুর রহমানের জ্ঞাত আয় বর্হিভূত স্থাবর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আদালত আমাকে রিসিভার নিয়োগ করেন। আদালতের নির্দেশে ৩ বিঘা ২৫ শতক জমির দখল বুঝে নিয়ে লাল ঝান্ডা পুঁতে দেওয়া হয়েছে। তিনি আমার এলাকায় না থাকায় জয়পুরহাট সদরের ছয় শতাংশ বাসার দখল নেওয়া হয়নি।




