কালুখালীর মদাপুরে পেঁয়াজের বীজতলা নষ্ট,
বোরহান উদ্দিন, কালুখালী, রাজবাড়ী :
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার লাড়ীবাড়ী মাঠে পেঁয়াজের বীজতলা নষ্টের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও একই ধরনের নাশকতার অভিযোগ উঠেছে মদাপুর ইউনিয়নের কাটাবাড়ীয়া গ্রামে। এলাকাবাসী বলছেন, যেন কৃষকের সঙ্গে একের পর এক ‘নিষ্ঠুর খেলা’ চলছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়—মৃত দেলবার খা’র পুত্র মোঃ ফজলু খা, ইয়াকুব খা’র পুত্র মোঃ রফিক খা এবং রোকন মোল্লার পুত্র আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার বপনকৃত প্রায় ৪০ শতাংশ জমির পেঁয়াজের বীজতলা নষ্ট হয়ে ঝলসে গেছে। কৃষকদের দাবি, রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা বীজতলায় পচনশীল কীটনাশক ছিটিয়ে দিয়েছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে সবুজ চারা কালো হয়ে মরে যায়—এখন পুরো বীজতলা উজাড়।
কৃষক মোঃ ফজলু খান বলেন,
“আমার নিজের কোনো জমি নেই। অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে ৪ কেজি পেঁয়াজের বীজ বপন করেছিলাম। কত কষ্ট করে নিয়ম করে পরিচর্যা করেছি! কিন্তু কে বা কারা সবটা নষ্ট করে দিলো। এখন আমার কাছে নতুন করে চারা কেনার সামর্থ নেই। আমার সব শেষ হয়ে গেল।”
ধারদেনা করে চাষ করা রফিক খা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
“এক কেজি হাইব্রিড রঙ্গিলা বীজ কিনতে ধার করতে হয়েছে। ভেবেছিলাম এবার ধান্দা ঘুরে দাঁড়াবো। কিন্তু যেভাবে চারা মরল, তাতে আমার মাথায় হাত। এই মৌসুমে আর পেঁয়াজ চাষ করতে পারবো না—ক্ষতির পরিমাণ সামাল দেওয়াই এখন কষ্ট।”
কৃষকদের এই দুর্দশা দেখে প্রতিবেশীরাও ব্যথিত। কেউ কেউ বলছেন, স্থানীয়ভাবে কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতা বা কৃষকদের সফলতা সহ্য না করতে পেরে কেউ এ নাশকতা করে থাকতে পারে। তবে ঘটনাটি তদন্ত ছাড়া কিছু বলা যাচ্ছে না।
মদাপুর ইউপির উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অলোক কুমার প্রামাণিক বলেন,
“বীজ বপনের সময় থেকে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছিলাম। পরে চারা শুকাতে দেখে আমাকে খবর দিলে এসে দেখি—পচনশীল কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাদের আর্থিক ক্ষতির বিষয়টা আমি আমার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে জানিয়েছি, তিনি আশ্বাস দিয়েছেন তাদেরকে কৃষি প্রণোদনার বিষয়ে। ”




