আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্র ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ভুমিকম্পের ঝুঁকি শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রাম অফিস:
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি), চট্টগ্রাম কেন্দ্র ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)’র যৌথ উদ্যোগে ২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ০৬:৩০ মিনিটে কেন্দ্রের মিলনায়তনে “Earthquake Risk in Bangladesh: Impact on National Econoamy”শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান মনজারে খোরশেদ আলম এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খান মোঃ আমিনুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)’র প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক।মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)’র প্রাক্তন উপাচার্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)’র চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ নুরুল করিম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চট্টগ্রাম ব্যুরো চীফ মোঃ শাহ নেওয়াজ, এ্যাব’র প্রাক্তন সভাপতি প্রকৌশলী সেলিম মোঃ জানে আলম, দি ফোরাম অফ ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড আর্কিটেক্স বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সহ-সভাপতি, প্রকৌশলী মোমিনুল হক।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, আইইবি,ভাইস চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম কেন্দ্র, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ভাইস চেয়ারম্যান (এডমিন. প্রফেশ.এন্ড এসডব্লিউ)।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধকার অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাকৃতিক ও মনুষ্য সৃষ্ট প্রভাব বাংলাদেশকে প্রভাবিত করছে, বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশে বড় ধরনের কোন ভূমিকম্প হয়নি, কিন্তু এই জন্য আমরা আর অবহেলা করতে পারি না। ৭১ সাল পর্যন্ত আমাদের দেশে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, কোন বিল্ডিং কোড মানা হয়নি। চট্টগ্রামে অসংখ্য ভবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে কত ক্ষতি হবে তা নির্ণয়ের জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার বর্ডার, সিলেট বর্ডারে বড় ধরনের ফল্ট রয়েছে, আমাদের সর্তকতার সাথে ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারি স্থাপনা সমূহের সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে, ব্যক্তি পর্যায়ের স্কুল -কলেজ, মাদ্রাসা সমূহের দায়িত্ব ব্যক্তিগতভাবে নিতে হবে। কোটি টাকার স্থাপনার জন্য সয়েল টেস্টের ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা বাঁচানোর জন্য আমরা অনভিজ্ঞ লোকদের দিয়ে কোন রকমের রিপোর্ট দিয়ে কাজ চালিয়ে যাই, এই স্থাপনা আমাদের ঝুঁকি তৈরি করছে। বালি দিয়ে পুকুর ভরাট করে আমরা ভবন তৈরি করছি, এই স্থাপনা আমাদের ঝুঁকি তৈরি করছে।
ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি করতে হবে। চট্টগ্রামে যত্রতত্র ভবন তৈরি হচ্ছে, সিডিএ ‘র অনুমোদন না নিয়ে বা ফোর্স করে অনুমোদন নিয়ে ভবন তৈরি হচ্ছে, এই ভবনের ডাইভার কে নিবে?।
দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সমূহের এসেসমেন্ট করে ঝুঁকি নির্ধারণ করতে হবে । মাঝারি থেকে বড় ধরনের ভূমিকম্পে চট্টগ্রাম বন্দরের কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে, এ বিষয়ের সতর্ক হতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে উন্নত দেশগুলো ভূমিকম্পের পূর্বাভাস নির্ণয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জাপান, চীন উন্নত মানের স্যাটেলাইট ব্যবহার করে ভূমির অনেক গভীরের অবস্থা বিশ্লেষণ করে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস নির্ণয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ঝুঁকি জাতীয় অর্থনীতির উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। তাই দেশের অর্থনীতি রক্ষার্থে ভূমিকম্পের হাত থেকে বাঁচার লক্ষে আমাদের করণীয় বিষয়সমূহ যথাযথভাবে পালন করা নৈতিক দায়িত্ব হয়ে পড়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মনজারে খোরশেদ আলম বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভূমিকম্পে সতর্কতা ও করণীয় শীর্ষ সেমিনারটি খুবই অর্থবহ। তিনি বলেন ভূমিকম্প রোধ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়, কিন্তু ভূমিকম্পের প্রভাব থেকে জানমাল রক্ষা করার উপায় হিসেবে প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে।
সেমিনারের দ্বিতীয় পর্যায়ে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)’র প্রাক্তন উপাচার্য ড. প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক,চুয়েট’র প্রাক্তন উপাচার্য ই.প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিতরণ দক্ষিণাঞ্চল), চট্টগ্রাম’র প্রধান প্রকৌশলী মোঃ কামাল উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ নূরুল করিম,এ.জি.এম.সেলিম, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং চেয়ারম্যান,ইমারত নির্মাণ কমিটি এবং মোঃ আবু ঈসা আনসারী, প্রকল্প পরিচালক, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাস্টারপ্ল্যান প্রজেক্ট। প্যানেল আলোচনায় সঞ্চালনায় ছিলেন প্রকৌশলী শাহে আরেফিন, নির্বাহী প্রকৌশলী,রোডস এন্ড হাইওয়ে এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন প্রকৌশলী মোঃ কামরুজ্জামান, সহকারী (অর্থ)।প্রায় ৬ শতাধিক প্রকৌশলী ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান হতে আগত অংশগ্রহণ কারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়।





