ঈদুল ফিতরের উপহার (ভিজিএফ) চালের কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে

কাউছার আহমেদ টিপু।ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা প্রতিনিধি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর অসহায় ও হতদরিদ্রদের মাঝে বরাদ্দকৃত ঈদুল ফিতরের উপহার (ভিজিএফ) চালের কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকাল থেকে উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নে ৯টি ওয়ার্ডের দরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফের ১ হাজার ৪৫টি কার্ডের মাধ্যমে চাল বিতরণ করা হয়।
জানা যায়, কার্ড প্রতি ১০ কেজি চালের হিসেবে ৩৪৮ বস্তা চাল পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদে আনা হয় এবং সেই অনুপাতে ভিজিএফের ১ হাজার ৪৫টি কার্ডের মাধ্যমে ৯ টি ওয়ার্ডে চাল বিতরণ করা হয়। এসব কার্ড বিতরণে প্যানেল চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার স্বজনপ্রীতি করেছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
চাল নিতে আসা একাধিক নারী-পুরুষ জানান, ১০ কেজি চালের পরিবর্তে ৮ থেকে ৯.৫ কেজি করে চাল পেয়েছেন তারা। আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবার ও চালের কার্ড পেয়েছেন। কেউ কেউ একাধিক কার্ড পেয়েছেন। পরে তারা সে চাল নিয়ে দোকানে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেয়।
সরেজমিনে গিয়ে ৭-৮ জনের চাল পরিমাপ করে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল কম দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এছাড়া প্রত্যেক ইউপি মেম্বারকে ৬৫-৭০টি করে চালের কার্ড দিয়েছেন বলে জানান পরিষদের একাধিক মেম্বার। ১ হাজার ৪৫টি কার্ডের মধ্যে প্রায় ৩০০টির অধিক কার্ড লুকোচুরির মাধ্যমে প্যানেল চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার নিজের কাছে রেখে দেয়। চাল কম দেওয়ার ফলে বিতরন শেষে ৩৩ বস্তা অর্থাৎ ৯৯০ কেজি চাল অবশিষ্ট রয়ে যায়। পাহাড়পুর ইউপির সচিব মোহাম্মদ কুতুবুর রহমান জানান, চাল বিতরণ শেষ হয়েছে, কোনো চাল অবশিষ্ট নাই।
চাল কম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল (২) চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার বলেন, ‘ হয়তো মাপে উনিশ বিশ হইতে পারে।বর্তমানে নির্বাচিত চেয়ারম্যান নেই, প্যানেল চেয়ারম্যান আছে। এছাড়াও বিতরণের পর ৩৩ বস্তা চাল অবশিষ্ট থাকা এবং ৩০০টির অধিক কার্ড চেয়ারম্যানের কাছে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা না বলে চলে যাই।
এ বিষয়ে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধনা ত্রিপুরা জানান, ভিজিএফ নিয়ে অনিয়ম এবং দুর্নীতি কোন অবস্থাতে বরদাশত করা হবে না। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্যানেল চেয়ারম্যানসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।