সারাদেশ

আজ সেই ভয়াল ১৯ ফেব্রুয়ারী, এম ভি মহারাজ লঞ্চডুবির ২০ বছর।

শামীম আহমেদ, মতলব দক্ষিন থেকেঃ
আজ সেই ভয়াল ১৯ ফেব্রুয়ারি! আমাদের মতলব বাসীর জন্য শোকাবহ একটি দিন। ২০০৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ১০.৩০ ঘটিকায় প্রায় আড়াই থেকে তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকার সদরঘাট থেকে মতলবের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এম ভি মহারাজ লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাছাকাছি এসে হঠাৎ করে প্রচন্ড ঝড়ের কবলে পড়ে বুড়িগঙ্গা নদীতে নিমজ্জিত হয়ে যায়। ঝড়ের রাত এবং লঞ্চটি নদীতে উল্টে যাওয়ার কারণে ভিতরে থাকা অধিকাংশ যাত্রীই বের হতে পারেননি। যাঁর ফলশ্রুতিতে সকলের সলিল সমাধি ঘটে বুড়িগঙ্গা নদীতে। লঞ্চটিতে মতলব দক্ষিণ ও উত্তর উপজেলার যাত্রী ছাড়াও চাঁদপুর, শরীয়তপুর, ভোলাসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলার যাত্রী ছিল।
ভয়াবহ এই লঞ্চ দুর্ঘটনায় মতলবের প্রায় আড়াই শতাধিক যাত্রী নিহত হন। মতলবের ইতিহাসে এরকম ভয়াবহ দুর্ঘটনা আর কখনো ঘটেনি। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় অনেক পরিবারের প্রায় সকলেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন। আবার কোন কোন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছিল। অনেক মৃত ব্যক্তি কে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি।
লঞ্চ দূর্ঘটনায় নিহত স্বজনদের কান্না আজও থামেনি। মতলববাসীর জন্য আজকের দিনটি হচ্ছে শোকাহত এক অবিস্মরণীয় দিন। লঞ্চ দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের মধ্যে ছিল নারায়নপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, তার কন্যা মতলব কঁচি-কাঁচা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী শিলাত জাহান অর্থি, উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুল হাই মাস্টার, আইসিডিডিআরবির ডাক্তার মো. মাসুম, দগরপুরের প্রকৌশলী ফারুক দেওয়ান, মতলব বাজারের সার ব্যবসায়ী ইয়াসিন মৃধা, ডেফোডিল ইউনির্ভাসিটির কর্মকর্তা ফারুক দেওয়ানসহ স্বপরিবার, দশপাড়া গ্রামের মফিজুল ইসলম, বাইশপুর গ্রামের ছোট খোকন ও বড় খোকন, মতলব উত্তরের বারহাতিয়া গ্রামের ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী শাহআলম, এনায়েত নগর গ্রামের মুসলিম প্রধানের মা, স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে, এনায়েত নগর সাহেব বাজারের তৎকালীন একমাত্র টেলিফোন ব্যবসায়ী আজিজের বাবা, মা এবং ভাগিনা,সহ নাম না জানা অনেকের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত লাশগুলো তখন মতলব দক্ষিণ থানার সামনে সারিবদ্ধ ভাবে তাবু টানিয়ে রাখা হয়েছিল। লাশের স্বজনদের আহাজারিতে পুরো মতলবে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অধিকাংশ লাশের মুখমন্ডল ও শরীর গলে যাওয়ায় তাদের চিনতে আত্মীয় স্বজনদের হিমশিম খেতে হয়েছিল। লাশের পরনে থাকা পোশাক এবং জন্মগত কোন চিহ্ন দেখে অনেক লাশ সনাক্ত করেছে স্বজনরা। আর যে সকল লাশের কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি তাদের ছবি তুলে তাদের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে ঢাকিরগাঁও রিয়াজুল জান্নাত কবরস্থানে দাফন করা হয়। বেওয়ারিশ লাশের কবরের পাশে এসে লাশ খুঁজে না পাওয়া স্বজনরা দূর-দূরান্ত থেকে এসে কবর জিয়ারত ছাড়া অন্য কোন উপায় ছিল না তাদের।
আমরা চাঁদপুইরা পরিবারের পক্ষ থেকে মৃত্যুবরণকারী সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি!

You may also like

সারাদেশ

মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক হলেন সাব্বির আহমেদ সামাদ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে প্রচার সম্পাদক পদে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার একনিষ্ঠ ও ত্যাগী ছাত্রনেতা সাব্বির আহমেদ সামাদ।
সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,