সারাদেশ

শ্যামনগরে বোরো আবাদে চাষের জমি বেড়েছে

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বোরো আবাদের প্রতি কৃষকের আগ্রহ দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। বর্তমানে বোরো চাষে কৃষকরা সময় কাটাচ্ছেন। কৃষকের প্রধান ফসল আমন ঘরে উঠানোর সাথে সাথেই শুকনা মৌসুমের ধান বোরো আবাদের প্রতি কৃষকরা ব্যাপকভাবে ঝুঁকে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুমন মন্ডল জানান, চলতি বোরো মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২৩১০ হেক্টর। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বোরোধান আবাদ হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। গত বছর উপজেলায় বোরো চাষ হয়েছিল ২৩১০ হেক্টর জমিতে এবং ফলনও ভাল ছিল। ২০২৩ সালে বোরো আবাদ হয় ২২০০ হেক্টর এবং ২০২২ সালে বোরো আবাদ হয় ২১৯০ হেক্টর। এই হিসাবে দেখা যায় বছরের পর বছর বোরো আবাদের মাত্রা বেড়ে চলছে। লবনাক্ত এলাকা শ্যামনগর উপজেলা হলেও লবন সহিষ্ণু ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ বেশী।

উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউপির ধানখালী গ্রামের বোরো চাষি সুপদ বৈদ্য, খোকন বৈদ্য বলেন তিন বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হচ্ছে। গতবছর একই জমিতে বোরো ধানের চাষ করে ভাল ফসল পেয়েছেন। জেলেখালী গ্রামের বোরো চাষি নিরঞ্জন মন্ডল বলেন বোরো ধান চাষ তিনি বেশ কয়েক বছর যাবত করে আসছেন এবং ফলনও পাচ্ছেন ভাল। কিন্ত তিনি বলেন বোরো চাষের প্রধান অন্তরায় মিষ্টি পানির অভাব। যে সকল খাল এলাকায় রয়েছে সে গুলিতে লবন পানি ভরা থাকে, লিজ দেওয়া থাকে। আবার পলি পড়ে ভরাট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কৈখালী গ্রামের বোরো চাষি লুৎফর রহমান বলেন দুই বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে নিজস্ব পুকুরের পানি ও বৃষ্টির পানি ভরসা করে। তিনি বলেন এমন অনেক চাষি আছেন তারা আকাশ পানে চেয়ে থাকেন নিজস্ব সংরক্ষিত পানি ফুরিয়ে গেলে। এ জন্য তারা খাল গুলিতে মিষ্টি পানি সংরক্ষণের দাবী জানান।

শ্যামনগর ইউপির বোরো চাষি শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন উপজেলায় আমন ফসলের পর বোরো ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। এ ক্ষেত্রে উপজেলার প্রতিটি ইউপির খাল গুলি পুনঃখনন করা, মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে প্রকাশ, শ্যামনগর উপজেলায় বোরো ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়ে চলেছে যেভাবে সেক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মঈনউদ্দীন,সুমন মন্ডল আশা প্রকাশ করে বলেন ২৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হতে পারে। উপজেলায় এ পর্যন্ত ১৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়ে গেছে। উপজেলায় কৃষকরা লবন সহিষ্ণু জাত  ব্রি-৬৭ ও ব্রি -ধান ২৮ সহ অন্যান্য জাতের ধান চাষ করে থাকেন বলে জানা যায়।

জানা যায়, উপজেলায় ১৩০টির অধিক খাল রয়েছে যে গুলি পুনঃখনন করে মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করা হলে কৃষকরা শুকনা মৌসুমে বোরো ধান চাষ সহ অন্যান্য ফসল আবাদ করতে পারেন। এখানে মিষ্টি পানির সংকট রয়েছে । উপজেলায় লবনাক্তার প্রকোপ থাকলেও লবন সহিষ্ণু ধান চাষ করে কৃষকরা সফল হচ্ছেন । বর্তমানে জমিতে ৩/৪  পিপিটি পরিমান লবন রয়েছে বলে জানা যায়। তবে শুকনা মৌসুমে লবনাক্তার পরিমান একটু বেড়ে যায়। উপজেলা কৃষি অফিস বোরো চাষিদের বেশি বেশি জৈব সার ব্যবহার করার কথা বলেছেন।

শ্যামনগর উপজেলা চিংড়ী চাষের প্রবন এলাকা হলেও চিংড়ীতে বেশী লাভবান না হওয়ায় কৃষকরা আমন, বোরো ধান চাষ সহ অন্যান্য ফসল আবাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন। মুন্সিগঞ্জ ,কৈখালী, রমজাননগর, ভূরুলিয়া, নুরনগর,শ্যামনগর সহ অন্যান্য ইউনিয়নে বোরো আবাদের ব্যাপকতা বেড়ে চলেছে। এলাকার সচেতন মহলের মতে জোনিং সিস্টেমে ধান ও চিংড়ী চাষ করা সময়ের দাবী বলে অনেকে মত প্রকাশ করেছেন।

You may also like

সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,
সারাদেশ

আইনপুর গ্রামে পরিতোষ , সন্তোষ বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে দুর্ঘটনা ঘটে

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আইনপুর গ্রামের পরিতোষ সূত্রধর ও সন্তোষ সূত্রধর বাড়িতে আগুনে দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার ০৭/০৮/২৪ ইং