কালাইয়ে হারিয়ে যাওয়া মৃৎশিল্পকে নতুন প্রাণ ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে ‘শেকড়’

জাহিদুল ইসলাম জাহিদ স্টাফ রিপোর্টার, জয়পুরহাট।
গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। প্রযুক্তির অগ্রগতি, প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের জিনিসের সহজলভ্যতায় এই শিল্পে জড়িত অনেক কারিগর পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছেন। ইতোমধ্যে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যোগ দিয়েছেন একশোর অধিক পরিবার। এমন সংকটে হারিয়ে যাওয়া মৃৎশিল্পকে আধুনিকতার ছোঁয়ায় টিকিয়ে রাখতে কাজ করছে ‘শেকড়’ নামে একটি সামাজিক উদ্যোগ।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মহেশপুর গ্রামে তাদের পরিবারের খোঁজ খবর, মৃৎশিল্পীদের নিয়ে মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরীতে উৎসাহ, পরামর্শ, প্রশিক্ষণ এবং তাদের পেশাকে অত্যাধুনিক করার লক্ষ্যে মৃৎশিল্পীদের পাশে দাঁড়াতে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে ‘শেকড়’।
কালাই উপজেলার মহেশপুর গ্রামের প্রবীণ মৃৎশিল্পী গুরুচরণ পাল জানান, আগে মাটির হাঁড়ি-পাতিল, প্রদীপের ভালো চাহিদা থাকলেও এখন আর তেমন বিক্রি নেই। ফলে তার সন্তান অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।
‘শেকড়ের’ প্রতিষ্ঠাতা সাজিয়া ইসলাম পায়েল বলেন, “মৃৎশিল্প শুধু আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়, এটি হাজারো কারিগরের জীবন-জীবিকার মাধ্যম। আমরা শিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে চাই।”
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান বলেন, “লোকজ সংস্কৃতি রক্ষা ও স্থানীয় মৃৎশিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। ভবিষ্যতে সৃজনশীল, দৃষ্টিনন্দন কাজের জন্য প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজনের মাধ্যমে এই শিল্পের বাজার সম্প্রসারণে আমরা কাজ করব।” মৃৎশিল্পকে ঘিরে এমন উদ্যোগ গ্রামীণ অর্থনীতিতে যেমন ভূমিকা রাখবে, তেমনি সংরক্ষিত থাকবে বাংলার সাংস্কৃতিক শেকড়।