যৌতুকের জন্য স্বামীর দেয়া কেরোসিনের আগুনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ত্রীর মৃত্যু

মোঃ সোহেল রানা, চাঁদপুর প্রতিনিধি:
যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের এক পর্যায়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় স্বামী, পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে তার মৃত্যু হয়।
গত বৃহস্পতিবার(১৬ অক্টোবর) বিকেলে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর হসপিটালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকায় রেফার করে। তিনদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর আজ সকালে তার মৃত্যু হয়। অভিযুক্ত রাকিব মিজি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১০নং গোবিন্দপুর মিজি বাড়ীর বাসিন্দা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা পারভীন বাদী হয়ে গত ১৬ তারিখ বৃহস্পতিবার ফরিদগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানা পুলিশ এখনো পর্যন্ত কোনো আসামীকে গ্রেপ্তার করেনি।
থানায় লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রাকিব মিজির(২৫) স্ত্রীর বাপের বাড়ী চাঁদপুর সদরের চান্দ্রা ইউনিয়নের মধ্য মদনা গ্রামে। তিন বছর আগে রাকিব মিজির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের ২ মাস বয়সী গর্ভের সন্তানসহ দুই বছর বয়সী দুটি সন্তান আছে। নির্যাতনের শিকার ওই নারীর অভিযোগ, তার স্বামী রাকিব মিজি যৌতুক লোভী ও নারী নির্যাতনকারী। বিয়ের পর যৌতুকের জন্য সে তাকে প্রায়ই মারধর করতো। ঘটনার দিন বিকেলে যৌতুকের দাবিতে রাকিব তাকে মারধর করে। একপর্যায়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রাসহ মেয়ের বাপের বাড়ির লোকজন এসে তাকে উদ্বার করে চাঁদপুর সদর হসপিটালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। সে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ইনষ্টিটিউটে তিনদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ সকালে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত রাকিবকে বাসায় গিয়ে না পেয়ে বারবার ফোনকল করেও পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্ত রাকিবের বাবা আহসান মিজি জানান, প্রায়ই খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঘটনার দিন আমি উপস্থিত ছিলাম না পরে বাসায় এসে জানতে পারি।
মামলার বাদী ভুক্তভোগীর মা পারভীন বেগম জানান, বিয়ের পর হতেই যৌতুক চেয়ে আমার মেয়ের ওপর অমানুষিক শারীরিক মানসিক নির্যাতন করতো। ঘটনার দিন আমার মেয়েকে শুধু নির্যাতন নয় গায়ে কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছে পরে চিকিৎসাধীন থাকার পর সে মারা যায়। আমি আইনের কাছে সঠিক বিচার আশা করছি।
ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু তাহেরকে কল করলে বলে আপনি ওসি স্যারের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেন।
ফরিদগঞ্জ থানা অফিসার্স ইনচার্জ শাহআলম মিটিং এ থাকায় যোগাগাযোগ করা সম্ভব হয়নি পরে একাধিকবার ফোনকলে চেষ্টা করা হলেও কল রিসিভ হয়নি।