রায়পুরে গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, প্রবাসীর পরিবারের দাবি হত্যা
রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি:
গৃহবধু মৌসুমি বেগম (২৫)। নয় ও দুই বছরের দুই সন্তান রয়েছে। নিহত হওয়ার আগে ১০ মিনিট কথা হয় সৌদি প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে। রাত ১টায় মৌসুমির ঝুলন্ত নিথর দেহের পায়ে দুধের জন্য চিৎকার দিয়ে কাঁদছে দুই বছরের শিশু কণ্যা। এই চিৎকার শুনে শশুর ও শাশুরী প্রববাসীর ঘরে গিয়ে দেখেন মৌসুমির মৃত দেহ ঝুলছে। এতেই পুরো এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। সকালে হায়দরগন্জ ফাঁড়ি পুলিশ সদস্যরা এসে গৃহবধুর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
গত রোববার রাতে (২৪ আগষ্ট) স্ত্রী আত্নহত্যা করেনি তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে আবুল কাশেম তার ফেইসবুকে পোষ্ট দিলপ তোলপাড় শুরু হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২ আগষ্ট রাত ২টার সময় লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে চরআবাবিল ইউপির দক্ষিন উদমারা গ্রামের আক্তার হাফেজ বেপারি বাড়ীতে প্রবাসীর কাশেমের ঘরে।
গত ৩ আগষ্ট সকালে পুলিশ গৃহবধু মৌসুমি বেগমের মৃত দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এঘটনায় নিহতের বড় ভাই জহির হোসেন বাদি হয়ে রায়পুর থানায় আতহত্যার মামলা করেন।
গত এক মাসেও নিহতের ময়নাতদন্তের রিপোট না আসায় উদ্ধিগ্নে রয়েছেন পরিবার।
নিহতের স্বজনের দাবি, ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেননি। এলাকারই দুই ব্যাক্তি কৌশলে বসতঘরে ঢুকে স্বর্ণালংকার চুরির চেষ্টা করে। এসময় মৌসুমি চিনতে পারায় শ্বাসরোধ করে তাঁকে হত্যা করে মৃত দেহ বসতঘরের আড়ার সাথে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়। মৌসুমি বেগম রায়পুরের দক্ষিন চরআবাবিল ইউপির দক্ষিন উদমারা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে।
মঙ্গলবার বিকেলে (২৬ আগষ্ট) সরেজমিন গেলে পুলিশ, এলাকাবাসী ও নিহত মৌসুমি বেগমের স্বজনরা জানান, প্রায় নয় বছর আগে একই গ্রামের মৌসুমি বেগমের সঙ্গে আবুল কাশেমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্থানীয় একটি কোম্পানিতে চাকুরী করতো কাশেম। দাম্পত্য জীবন ভালো চলছিলো। গত তিন মাস আগে সৌদি আরবে যান আবুল কাশেম। গত দুই আগষ্ট রাত ৮টায় ইমুতে মৌসুমির সঙ্গে প্রায় ১০ মিনিট কথা হয় আবুল কাশেমের। রাত ১টায় শিশু মেয়ের দুধের জন্য চিৎকার শুনে শশুর ও শাশুরি বসতঘরে গিয়ে দেখেন মৌসুমির মৃতদেহ ঝুলছে রশিতে।
খবর পেয়ে চরআবাবিল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল আজিজসহ গন্যমাণ্য ব্যাক্তিরা ঘটনাস্থলে এসে হায়দরগন্জ ফাঁড়ি পুলিশকে খবর দেন। সকালে–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সকলের উপস্থিতিতে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মৌসুমি বেগমের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
সোমবার আবুল কাশেম তার হোয়াটসপে এ প্রতিবেদককে জানান, গত ২ আগষ্ট রাত ১১টায় ইমুতে মৌসুমির সঙ্গে ১০ মিনিট কথা বলেছেন। রাত ২টায় সংবাদ পান মৌসুমি আত্নহত্যা করেছেন। রাত ৮টায় প্রতিবেশি এক প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে বাচ্চাদের জন্য দুধ আনতে গিয়েছিলেন মৌসুমি। এছাড়া প্রতিবেশি ওই নারী এক স্বজনের সাথে রাতে অবৈধ দৈহিক সম্পর্ক দেখতে পায় মৌসুমি। একারনে মৌসুমি কে হত্যা করা হয়। আমি ও আমার পরিবার ঘাতকদের খুঁজে বের করে হত্যার বিচার চাই।