রাসুল (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করা ইবি কর্মকর্তাকে বহিষ্কারের দাবি, ক্ষমা চান ফেসবুকে

মিজানুর রহমান, ইবি প্রতিনিধি:
রাসূল (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক কর্মকর্তাকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। কটূক্তিকারী হলেন ওই বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মোজাম্মেল হক। তিনি ঝিনাইদের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার তাহেরহুদা ইউনিয়নের ভুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
এনিয়ে গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ওই কর্মকর্তার নেমপ্ল্যাট ভেঙ্গে প্রতিবাদ ও তার বহিষ্কারের আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার তদন্তে বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলামকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে জানা গেছে, গত সোমবার (২১ এপ্রিল) রাসূল (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করায় মোজাম্মেল হককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী। মোজাম্মেল হক দীর্ঘদিন ধরে নবী-রাসূলদের নিয়ে কটূক্তি করে আসছিলেন বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর। তবে তাকে পুলিশি হেফাজত থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) এর সাথে বেয়াদবি বা কটূক্তি কখনও মেনে নেয়া যাবে না। দ্রুত তদন্ত করে চাকরি থেকে বহিষ্কার করতে হবে। তার দোসরের সাথে সম্পৃক্ততাও আছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
আজ প্রশাসন ভবনের সামনে অভিযুক্তের বিচারের দাবি এবং চাকরি থেকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে এক ফেসবুক স্টাটাসে ‘প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক ভিডিও ধারণ করে ভাইরাল করা হয়েছে’ উল্লেখ করে ক্ষমা চেয়েছে অভিযুক্ত কর্মকর্তা।
তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেন, “আমি মো. মোজাম্মেল হক, সহকারী রেজিস্ট্রার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার আল-হাদীস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে কর্মরত আছি। আমার নামে সম্প্রতি ফেসবুকে মহানবী (সা.) সম্পর্কে কটূক্তির প্রতিবাদ প্রসঙ্গে দেখা যায়। আমি মুসলমান। হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার প্রাণ। আল-কুরআন ও মহানবী (সা.) এর সুন্নাত আমার জীবন বিধান। মহান আল্লাহ ও মহানবী (সা.) এর আনুগত্য পালন করার জন্যই আমার জন্ম হয়েছে।”
তিনি আরও লিখেন, “প্রিয় দেশবাসী ভাইরাল ভিডিয়োতে আপনারা লক্ষ্য করেছেন আমাকে কিভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে মহানবী (স:) সম্পর্কে কটূক্তির দায় স্বীকার করিয়ে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে।২১ এপ্রিল আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার সময় ১০/১২ জনের অধিক সন্ত্রাসী দল দেশীয় অস্ত্র, লাঠি-সোঁটা নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায়, আমার মাথায়, কাধে, পিঠে ও ডানায় লাঠি দিয়ে মাধর করে। আমার জীবন বাঁচাতে স্ত্রী, মা, ভাই-ভাবী এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারধর করে। জোরপূর্বক আমাকে ধূলিয়া গ্রামের সাবেক মেম্বার রাশু কাজীর গোডাউনে নেওয়া হয় এবং নবীর কটুক্তির ভিডিও ধারণ করে ভাইরাল করা হয়। আমার অপরাধ আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান। আমি আওয়ামীলাগ সমর্থন করি। আমি আল্লাহকে স্বাক্ষী রেখে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করছি আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে ইসলামের পথে জীবন যাপন করার সুযোগদানে দেশবাসীর মর্জি হয়।”
এবিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন জানান, “ঘটনাটির তদন্ত করার জন্য ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় দিয়েছি। তদন্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করা হবে।”