বিপিএল এর সিলেট দলের নেট বোলার ধাপেরহাটের নিহত মামুনের জানাযায় হাজারো মানুষ

আশরাফুল ইসলাম গাইবান্ধা ::
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট ইউনিয়নের দূর্বৃত্তের হামলায় নিহত আব্দুল্লাহ আল মামুনের দাফন সম্পূর্ণ হয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারী বাদ আছর পীরেরহাট ঈদগাঁ মাঠে তার জানাযার নামাজ পর পীরেরহাটেই পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পূর্ণ হয়েছে। ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকলেও ছোট থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুন ছিলো ক্রিকেট খেলোযার, এ ক্রিকেট খেলা তাকে জেলা থেকে সারাদেশে পরিচিতি দিয়েছে। সে গত চার বছর দরে বিপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট সিলেট দলের নেট বোলার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
তার জানাযার নামাজে সহস্রাধিক মুসুল্লি অংশগ্রহণ করে। এ-সময় উপস্থিত ব্যক্তিরা বলেন,রাজনীতি যদি জনগনের জন্য হয়, সেখানে মতবিরোধ থাকতে পারে। তাই বলে এমন বর্বরোচিত হত্যা কান্ড মেনে নেয়া যায় না। মামুন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হলেও সে প্রায় চার পাচঁ বছর থেকে দলীয় কর্মকাণ্ডের সাথে জরিত ছিলো না। সে বিপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে।এটাকে আমরা সমর্থন করি না।সে যদি অন্যায় করে থাকে তার জন্য আইন আদালত আছে।
এ দিকে গত ১৩ ফেব্রুয়ারী বর্বরোচিত হামলা ও হত্যা কান্ডের বিচার চেয়ে তার বাবা মান্নান মন্ডল সাদুল্লাপুর থানায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও ২০/২২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে যাহার মামলা নম্বর ৭।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারী মামুনের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পরলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে এবং তার লাশ ধাপেরহাটে পৌঁছিলে লাশ নিয়ে জাতীয় মহাসড়কে অবস্থান নেয় তার স্বজন শুভাকাঙ্ক্ষী, পাড়া প্রতিবেশি সাধারণ মানুষ। পরে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা, এসিল্যান্ড,ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে মামলা রেকর্ড ও আসামি গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দিলে জাতীয় মহাসড়ক থেকে লাশ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নেওয়া হয়।এতে জাতীয় মহাসড়কে ১ ঘন্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।এর পর তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা মর্গে পাঠানো হয়।শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর তার গ্রামের বাড়ি খামার পাড়ায় লাশ নিয়ে আসা হয়। এসময় হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতরণা হয়।এসময় তার স্বজনরা চিহ্নিত অপরাধীদের নাম ধরে বিলাপ করতে থাকে।
তার বাবা মান্নান মন্ডল বাদী বলেন,জমি সংক্রান্ত জের ১-৫ আসামির সাথে খাস জমিতে বেড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদী গনের সাথে মনমালিন্য চলছিলো এরি সুত্র ধরেই আমার ছেলেকে তারা হত্যা করেছে।
সে দীর্ঘদিন হলো কোন দলীয় কর্মকাণ্ডের জড়িত ছিলো না। নিহত মামুনের স্ত্রী,মেয়ে আয়াত(৫) ও মা দিনা বেগম বলেন,তার স্বামী গত ১২ ফেব্রুয়ারী রাতে সিলেট থেকে ধাপেরহাটের বাসায় আসে।ওই দিন রাতে পরিবারের লোকজন নিয়ে পারিবারিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করছিলো এসময় মামলার এক নম্বর আসামি তাদের কর্মকান্ড বাহির থেকে মোবাইলে ধারন করে। বিষয়টি বুঝতে পেয়ে মামুন তাকে ভিডিও ডিলেট করতে বললে বাগবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি ঘটনা ঘটে। এটাকে কেন্দ্র করেই দলীয় সমর্থিত ব্যক্তিরা মামুন কে হত্যা করেছে।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ তাজ উদ্দিন বলেন,উক্ত ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এলাকার পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
উল্লেখ্য যে,গত ১৩ ফেব্রুয়ারী বিকাল ৩.৫০ ঘটিকায় কতিপয় চিহ্নিত দেশীয় অস্ত্র ধারী যুবক জাতীয় মহাসড়কের মামুন কে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে।নিহত আল মামুন উপজেলার খামার পাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নান মন্ডলের দ্বিতীয় পুত্র, বিপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট সিলেট দলের নেট বোলার হিসাবে কর্মরত ছিলেন ৪ বছর ধরে এবং সে ধাপেরহাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।তবে তার পরিবারের দাবী মামুন বিয়ের পর থেকে প্রায় চার বছর ধরে কোন দলীয় কর্মকাণ্ডের জড়িত ছিলো না।