লিঙ্গ রূপান্তরিত হয়ে সরিষাবাড়ীর শাহানাজ এখন তুহিন
রুমান শাহরিয়ার, জামালপুরঃ
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে লিঙ্গ রূপান্তরের পর শাহানাজ আক্তার(১৮) এখন মোঃ তুহিন মিয়া(১৮)।
গত সোমবার (০৯ জুন) উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের মেইয়া গ্রামের আব্দুল বাছেদের মেয়ে শাহানাজ আক্তার(১৮) এর লিঙ্গ রূপান্তরের এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, লিঙ্গ রূপান্তরিত মোঃ তুহিন মিয়া(১৮) জন্মের সময় পরিবারের ছোট মেয়ে শাহানাজ আক্তার হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন। তারপর ২০২৪ সালে পিংনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর পরিবারের হাল ধরতে জীবিকার তাগিদে গত ডিসেম্বরে ঢাকায় বেঙ্গল গার্মেন্টসে কর্মী হিসেবে যোগদান করেন।
যোগদানের পর শাহানাজ আক্তার(১৮) হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক চিকিৎসায় না কমলে সাভারের দি গ্রীন হাসপাতালে ডাক্তারদের শরণাপন্ন হলে টানা তিন মাস চিকিৎসার পর ২০২৫ সালের মার্চ মাসে শারীরিক গঠন ও কণ্ঠস্বরসহ অন্যান্য পরিবর্তন দেখা দিতে শুরু করে। একপর্যায়ে শাহানাজের লিঙ্গ রূপান্তরিত হয়।
পরে এই লিঙ্গ রূপান্তরের ঘটনা পরিবারের সদস্যদেরকে মুঠোফোনের মাধ্যমে জানালে পরিবারের সদস্যরা প্রথমে অবিশ্বাস করলেও পরে ভিডিও কলের মাধ্যমে তারা শাহানাজের শারীরিক গঠন ও অন্যান্য পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করে তাকে বাড়িতে আসতে বলে।
বাড়িতে আসার পর পরিবারের লোকজন যাছাই-বাছাই করে দেখতে পান সত্যিই শাহানাজের লিঙ্গ রূপান্তরিত হয়েছে। তাই পরিবারের সম্মতিতেই তার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মোঃ তুহিন মিয়া।
এবিষয়ে তুহিন মিয়া’র সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঢাকায় অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই তার শারীরিক গঠনের পরিবর্তন হতে শুরু করে। পরে একপর্যায়ে সে শাহানাজ আক্তার থেকে মোঃ তুহিন মিয়া’য় রূপান্তরিত হয়।
সাভারের দি গ্রীন হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, শরীরে অতিরিক্ত পুরুষ হরমোন থাকার কারণে এমনটা হতে পারে। এখন শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ, আমি নিজেকে স্বাভাবিক মনে করি।”
তুহিনের বাবা আব্দুল বাছেদ এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তার এক ছেলে ও দুই কন্যা সন্তানের মধ্যে ছোট মেয়েটি আল্লাহর ইচ্ছায় মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তরিত হয়েছে।
এবিষয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ রবিউল ইসলাম বলেন, “শরীরের হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। তবে জন্মগত লিঙ্গ পরিবর্তনের বিষয়টি একমাত্র চিকিৎসা পরীক্ষার মাধ্যমেই নিশ্চিত হওয়া যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এমন স্বাভাবিক পরিবর্তনের কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই, কারণ জন্মগত লিঙ্গটি সার্জারি ছাড়া সম্পূর্ণ পরিবর্তন অসম্ভব।”