সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপির নেতা শাহ আলম মানিক অস্ত্রের মুখে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে নির্যাতনের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বাবুল নামে এক ব্যক্তিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক শাহআলম মানিক সশস্র বাহিনী নিয়ে অস্রের মুখে অপহরণ করে পিস্তলের বাট দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়াগেছে৷
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আটটার টা দিকে এ ঘটনাটি ঘটে নারায়ণগঞ্জ সিটিকরপোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জের সুমিলপাড়ার আইলপাড়া এলাকায়৷ খবর পেয়ে এলাকাবাসী লাঠিসোটা নিয়ে বিএনপির ওই নেতাসহ তার বাহিনীকে ধাওয়া করলে শাহআলম মানিকসহ তার বাহিনী পালিয়ে যায়৷ বাবুলকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাবুল বলেন, আমাদের বসতঘরের জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য শাহআলম মানিক দীর্ঘদিন ধরে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে৷৷ আমরা জমি ছাড়তে রাজি না হওয়ায় শাহআলম মানিক আমাদের হত্যার হুমকি দেয়৷ এ ঘটনায় গত ২০ জুলাই বাবুল নারায়ণগঞ্জ আদালতে শাহআলম মানিককে প্রধান আসামী করে ৭ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন৷
বাবুল অভিযোগে আরও জানায়, বৃহস্পতিবার আদালত থেকে শাহআলম মানিকের কাছে নোটিশ আসার পর সে আমাকে হন্যে হয়ে খুজতে থাকে৷ এক পর্যায়ে খবর পায় বাবুল জালকুড়ি সীমা ডাইনিং এর কাছে আছে৷ শাহআলম মানিক ৩ টি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটর সাইকেল যোগে ৩০-৩৫ জনের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে রাতে বাবুলকে জালকুড়ি সীমা ডাইং এলাকা থেকে ধরে মারধর শুরু করে টেনে হেচড়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে আসে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরের চর সুমিলপাড়ায়৷ ৷
এ সময় শাহআলম মানিক বাবুলের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাদা দাবি করে এবং মামলা প্রত্যাহার করে বসতঘর ছেড়ে দিতে বলে৷ বাবুল রাজি না হওয়ায় শাহআলম মানিক পিস্তলের বাট দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে৷ বানুল এ সময়ে প্রাণ ভিক্ষা চান বিএনপির ওই নেতার পা ধরে৷ এদিকে বাবুলকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করার খবর পেয়ে বিএনপি কর্মী রুহুল আমিনের নেতৃত্বে এলাকাবাসী লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া করলে শাহাআলম মানিক তার দলবল নিয়ে পালিয়ে যায়৷
খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একাধিক টিম ঘটনাস্থলে যায়৷ অভিযুক্ত বিএনপি নেতা শাহআলম মানিক বলেন শুনেছি কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে বিএনপি কর্মী রুহুলও তার লোকজন৷ কি কারণে রুহুললাঠিসোটা হাতে শত শত লোক নিয়ে কাকে ধাওয়া করেছে আমি কিছুই জানিনা তবে আমার বাড়িঘরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে এবং আমার গাছে সাটানো ছবিসহ ব্যানার ছিড়ে ফেলেছে এবং ঘটনার সময় আমি ভয়ে একটি সিমেন্ট কারখানায় আশ্রয় নিয়েছি৷ তিনি কাউকে অপহরণ ও মারধর করেননি বলে জানান৷ তবে বাবুলের যে জমি সে জমি তিনি ক্রয়সূত্রে মালিক এবং বাবুল ও তার ভাই আবুলগংরা জোরপূর্বক জমি দখল করে রেখেছে বলে শাহআলম মানিক জানিয়েছেন৷
অপরদিকে বিএনপি কর্মী রুহুল আমিন বলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক শাহআলম মানিক দলবল নিয়ে বাবুল নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করার জন্য জাল কুড়ি থেকে অপহরণ করে এনে মারধর করছে এমন খবর পেয়ে আমরা এলাকাবাসী বাবুলকে উদ্ধার করেতে লাঠিসোটা নিয়ে ছুটে যাই৷ কিন্তু আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই বাবুলকে মারধর করে মুমুর্ষ অবস্থায় ফেলে শাহআলম মানিকগং পালিয়ে যায়৷ এখানে গুলিবর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেনি এবং শাহআলম মানিকের বাড়িঘরে আমরা কেউ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করিনি৷
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মাদ শাহীনুর আলম বলেন বিএনপি নেতা শাহআলম মানিক জালকুড়ি থেকে বাবুলকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করার খবর পেয়ে রুহুলের নেতৃত্বে এলাকাবাসী লাঠিসেটা নিয়ে বাবুলকে উদ্ধার করেতে ছুটে যায় তবে কোন গুলির ঘটনা ঘটেনি৷ তিনি আরও বলেন ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম পাঠিয়েছি৷ ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো