সারাদেশ

টাকা ছাড়া কার্ড দেন না ইউপি সদস্য হয়রত

ওয়াসিম সেখ, সিরাজগঞ্জ.
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ৪ নং শিয়ালকোল ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য (মেম্বার) মোঃ হযরত আলী। সরকারি ভাতার কার্ড কোনোটিই খরচ ছাড়া দেন না তিনি। কার্ড করার জন্য নেন অগ্রিম টাকা এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। কিন্তু তার দাবি, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।
হযরত আলীর বিরুদ্ধে টিসিবি ও মাতৃত্বকালীনসহ বিভিন্ন ধরনের ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে ‘টাকা নেওয়ার’ অভিযোগ আছে। এক্ষেত্রে তিনি অগ্রিম টাকা নেন। স্থানীয়দের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে মোটা টাকা আত্মসাতের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, হযরত মেম্বার সরকারি বিভিন্ন ভাতা কার্ড করে দিতে জনগণের কাছ থেকে টাকা নেন। চাহিদা অনুযায়ী তাকে অর্থ দিতে না পারলে ভাতা পাওয়ার উপযোগী ব্যক্তিরা কার্ড পান না। প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বাদ দিয়ে ঘুষ নিয়ে অন্যদের তিনি কার্ড দেন। এতে করে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বাদ দিয়ে ঘুষ নিয়ে অন্যদের তিনি কার্ড দেন। এতে করে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা সরকারের সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
শিয়ালকোল ইউনিয়নের চকশিয়ালকোল গ্রামের মােছাঃ রুখসানা খাতুন বলেন, আমার মেয়ে মােছাঃ সাধনা খাতুন যখন ৬মাস গর্ভবতী হয় তখন আমার ওয়ার্ডের সালাম মম্বারের সাথে যােগাযােগ করি। সালাম মেম্বার আমাকে বলে আমি যে বরারাদ্দ পেয়েছি সেগুলা গরিব অসহায়দের দিয়ে দিছি। পরবর্তীতে আমি সালাম মেম্বারকে যখন জোড়ালাে ভাবে ধরি তখন আমার সামনে থেকেই ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার মােঃ হযরত আলীকে ফোন যোগে বলে
আমার বরাদ্দ দিয়ে দিছি যদি আপনার কাছে বরাদ্দ থাকে তাহলে মোছাঃ সাধনাকে গর্ভবর্তী কার্ড করে দিয়েন বলে, আমাকে হযেরতের কাছে পাঠায়। অমি হযরতের কাছে গেলে হযরত আমাকে ৫,০০০/- (পাচ হাজার) টাকার প্রস্তাব দেয়। আমি দুই দিন সময় নিয়ে ৫,০০०/-(পাঁচ হাজার) হযরত কে দেই । কিন্তু আমার মেয়ের গর্ভবতী কার্ড এখনাে হয় নাই এবং আমাকে টাকা ফেরত দেয় নাই। টাকা ফেরত চাইতে গেলে আমার কাছে আরো ৩,০০০/-
টাকা দাবি করে। আমার মেয়ে গরিব হওয়ায় ৩,০০०/-(তিন হাজার) টাকা দিতে পারি নাই বলে আমার কার্ড হবে না পরিস্কার জানিয়ে দিছে ।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের কাছে আমার দাবি কার্ড দিক না দিক আমার টাকাগুলো যেন ফেরত দেয়। কার্ড দেওয়ার কথা বলে আমি ছাড়াও আরও অনেকের কাছ থেকেই উনি টাকা নিয়েছেন।
এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছিল।
তার বিরুদ্ধে রয়েছে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড (টিসিবি) বিতরণে জন প্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভোক্তাদের বিনামূল্যে দেবার কথা থাকলেও তা টাকা ছাড়া দেওয়া হচ্ছে না।
অভিযোগের সততা যাচাই করতে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে চলে আসে অনেকগুলো ভিডিও, যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি রুমের ভিতরে হয়রত মেম্বার তার লোকজন নিয়ে বসে আগে কার্ড দিচ্ছে পরে টাকা নিচ্ছে ।
অভিযোগের প্রসঙ্গে ইউপি সদস্য হযরত মেম্বার সঙ্গে কথা হলে তিনি সবকিছুই অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার বিষয়ে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি কারও কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিই না। না না আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেই নাই। কার্ডে দিয়েছিল ৪৯ টা।
বিষয়টি নিয়ে ৪ নং শিয়ালকোল ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার সাদাতকে ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোনোয়ার হোসেন বলেন, পূর্বে এরকম অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ মোঃ মেরাজ হোসেন মিসবাহ বলেন আমার ওপর তদন্তর দায়িত্ব ছিল, আমি আগামী রবিবার এই তদন্ত রিপোর্টটা জমা দিয়ে দিব।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,
সারাদেশ

আইনপুর গ্রামে পরিতোষ , সন্তোষ বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে দুর্ঘটনা ঘটে

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আইনপুর গ্রামের পরিতোষ সূত্রধর ও সন্তোষ সূত্রধর বাড়িতে আগুনে দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার ০৭/০৮/২৪ ইং