দেবীগঞ্জে কসমেটিকস ব্যবসায়ীকে গলা কেটে জবাই করে হত্যা

একেএম বজলুর রহমান, পঞ্চগড়:
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে মোকলেছার রহমান (৩৭) নামের এক যুবককে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে।
১১ জুন বুধবার রাত থেকে মোকলেছার রহমানকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ১২ জুন বৃহস্পতিবার সকাল বেলা খোরশেদা বেগম নামের এক মহিলা সুপাড়ি বাগানে ছাগল চড়াতে এসে মোকলেছার রহমানের গলাকাটা লাশ ফেলা রাখা অবস্থায় লাশ দেখতে পান। স্বজনরা লাশ দেখে চিৎকার করলে আশেপাশের আত্বীয় স্বজন বাড়ির পাশের সুপাড়ি বাগান থেকে তার গলাকাটা লাশ দেখে মোকলেছার রহমানের লাশ সনাক্ত করেন।
মোকলেছার রহমানের ভাগিনা সাদেকুল ইসলাম জানান, রাত সাড়ে ৯টার সময় আমাকে দোকানে বসিয়ে রেখে চলে যান। পরে আর তিনি দোকানে আসেননি।
তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম জানান, আমার স্বামী সন্ধ্যার সময় দোকানে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। তিনি আরও জানান, মোর্শেদা বেগমের নাম্বার থেকে মেসেজ আসছিল। আমার সামনে থেকেই ওই মেয়ের সাথে কথা বলতো। এটার জন্যই আমাদের সন্দেহ হয়।
শাহিনা নামের ছোট বোন জানান, আমার ভাই মোকছেদুল ইসলাম যখন ঢাকায় থাকতো তখন তার চাচাতো বোন মোর্শেদাদের বাসায় থাকতো। তাদের বাসায় খাওয়া দাওয়া করতো। তখন থেকেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠতো।
মোকলেছার রহমান (৩৭) একই এলাকার শাহাবুদ্দিনের ছেলে। তার বাড়ি দেবীগঞ্জ উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের খোঁচাবাড়ি এলাকার ধনমন্ডল ঢাকাইয়াপাড়া এলাকায়। মোকলেছার রহমানের মীম আক্তার (১৫), মোসলেমা আক্তার (৮) ও আয়শা আক্তার (১৮ মাস)নামে ৩ মেয়ে রয়েছে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশের দেবীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সামুয়েল সাংমা, দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা, দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের উপ অধিনায়ক সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার শুকুর আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পঞ্চগড় থেকে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিকেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) এর ক্রাইম সীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে লাশের আশেপাশের বিভিন্ন আলামত জব্দ করে নিয়ে যান।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিকেশন (পিবিআই) এর সাব ইন্সপেক্টর কামরুল হাসান, তন্নয় হাসানসহ ৪ জনের প্রতিনিধি দলও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মোকলেছার রহমান খোচাবাড়ি বাজারে কসমেটিকসের দোকান করতো। এর আগে সে মহেন্দ্র ট্রাক্টর ও মাইক্রোবাস চালাতো। এলাকাবাসীর ধারনা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে।
স্হানীয়রা জানান, এরআগে খোচাবাড়ি বাজারে মোকলেছার রহমান কসমেটিকসের দোকান করার সময় অন্য জনের সাথে দোকানকে কেন্দ্র করে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। তখন সে দোকানটি ছেড়ে দিয়ে মোকলেছার রহমান ঢাকা চলে যান।
স্থানীয়রা আরও জানান, মোকলেছার রহমান স্থানীয় এক মহিলার সাথে পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল। তার সাথে প্রতিদিনই মোবাইলে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলতো। এ বিষয়টি মোকলেছারের স্ত্রী ফাতেমা বেগমও জানতো। ফাতেমা বেগম তাকে বিয়ে করার জন্য অনুমতিও দিয়েছিল।
লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি প্রক্রিয়াধীন বলে জানান দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা।