মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় সাংবাদিকের উপর হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক –
চট্টগ্রাম মহানগরের খুলশী থানাধীন ঝাউতলা এলাকায় প্রকাশ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজি করে আসছিলো হোসেন ও জসিম দুই ভাই। উক্ত বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিবাদ জানালে উক্ত বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মোহাম্মদ রুবেল নামে এক সাংবাদিকের উপর গতরাতে হামলা চালায়। আহত সাংবাদিক দৈনিক একুশে সংবাদ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি ও চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিআরএ)–এর সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঘটনার পর তিনি খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
ভুক্তভোগী মো.রুবেল অভিযোগে উল্লেখ করেন, মঙ্গলবার সকালবেলা তিনি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন, যেখানে এলাকায় মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা সম্পর্কে সচেতনতা মূলক মন্তব্য করা হয়। এরপর রাত আনুমানিক ৯টা ৩০ মিনিটে ঝাউতলা বাজার রোড দিয়ে যাওয়ার সময় চাঁদাবাজ হোসেন রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সড়কের পাশে ‘ঝলক ক্লাব’–এর অন্ধকার গলিতে জোড়পূর্বক নিয়ে যায়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেনো স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে অকথ্যভাষায় গালমন্দ দিয়ে মব সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে স্থানীয় চিহ্নিত মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিত জসিম প্রকাশ গাজা ব্যবসায়ী জসিম অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে সাংবাদিক রুবেল এর মাথায় ও শরীরের বিভিন্নস্থানে কিলঘুষি মারতে শুরু করে। অপর অভিযুক্ত হোসেন সাংবাদিক রুবেলের হাতে থাকা স্মার্টফোনটি কেড়ে নিতে চায়। একপর্যায়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের চেষ্টা করে।
সাংবাদিক রুবেল এর চিৎকারে আশপাশের মানুষ এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় হুমকি দিয়ে বলেন এই যাত্রায় বেচে গেলি পরবর্তীতে তোকে পেলে প্রাণে মেরে ফেলবো, মোটরসাইকেল নিয়ে বাহির হলে ট্রাক দিয়ে চাঁপা দিয়ে এক্সিডেন্ট বলে চালিয়ে দিবো।
এই বিষয়ে খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আফতাব হোসেন বলেন, “অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। যাচাই শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এদিকে, একজন পেশাদার সাংবাদিকের ওপর এমন বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কমিউনিটি, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন। সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় সাংবাদিক নেতারা নিন্দা জানিয়ে বলেন “এই হামলা শুধু একজন সাংবাদিকের ওপর নয়, এটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের অধিকারের ওপরও হামলা। যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকরা ক্রমাগতভাবে হামলা, হুমকি ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এসব বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় সারাদেশে একযোগে আন্দোলন ও প্রতিবাদ গড়ে তোলা হবে।”