সারাদেশ

চট্টগ্রাম প্রতিদিন নিষিদ্ধ ও আয়ান শর্মাকে গ্রেফতারের দাবী

চট্টগ্রাম প্রতিদিনের নিবন্ধন বাতিল ও আয়ান শর্মার গ্রেপ্তার দাবি সনাতন সমাজ সহ চট্টলা বাসীর”

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:-
আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলার আসামি ও বিতর্কিত সাংবাদিক আয়ান শর্মার গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন সনাতনী সমাজ ও চট্টলাবাসী ।
একই সঙ্গে ‘চট্টগ্রাম প্রতিদিন’ ও ‘আলোকিত চট্টগ্রাম’ পত্রিকার নিবন্ধন বাতিলেরও দাবি জানানো হয়েছে।
১০ আগষ্ট রবিবার, দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।
কর্মসূচির আয়োজন করে সনাতনী সমাজ ও বীর চট্টলাবাসী। মানববন্ধন শেষে একই দাবিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মিথ্যা অপপ্রচার ও জন্মাষ্টমীকে ঘিরে সনাতন সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা ও বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে চাঁদাবাজ খ্যাত নিউজ পোর্টাল ‘চট্টগ্রাম প্রতিদিন’। আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলার আসামি আয়ান শর্মাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ
জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের আজীবন সদস্য দোলন দেবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন
বাপ্পী দে, সুব্রত আইচ, সৌরভ প্রিয় পাল, মিঠুন বৈষ্ণব, ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় চক্রবর্তী মানিক, প্রশান্ত পান্ডে, বিপ্লব চৌধুরী বিল্লু, অপু চৌধুরী আকাশ, মিটন রবি দাশ, রুবেল পাল, সৈকত বোস, প্রভাষ দাশ, সাগর দাশ, সুকান্ত তালুকদার জুয়েল, রয়েল কুমার পাল, স্মৃতি দে প্রিয়া, পান্না দাস, ডলি দাস, অপু দাস, অর্চনা দাস, মিনা বিশ্বাস প্রমুখ।
কে এই আয়ান শর্মা?
আয়ান শর্মার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই নানা অভিযোগ রয়েছে।
২০০৩ সালে অসহায় মানুষের সাহায্যের জন্য কনসার্টের নামে ৩ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়।
২০০৪ সালের ডিসেম্বরে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানার এক পুলিশ সদস্যের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।
রয়েছে ধর্ষণ, অপহরণ, ভয়ভীতি প্রদর্শন, মানুষকে হয়রানি, ধর্মীয় দাঙ্গার উস্কানি, মাদক ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সখ্যের অভিযোগ।
সাংবাদিকতার মহান পেশার আড়ালে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন কথিত সাংবাদিক আয়ান শর্মা। ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে মুচলেখা দিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে সাংবাদিকতার সাথে তার কলঙ্কিত নাম আর জড়াবে না কিন্তু প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে আবারও নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন।
২০০৮ সালে ঢাকার একটি আদালতে এক নারী মামলা করেন বিয়ের জাল কাগজপত্র তৈরি করে স্ত্রী দাবির অভিযোগে। পরে ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, সাংবাদিকতার প্রভাব ব্যবহার করে অপকর্মে জড়িতদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি সিন্ডিকেট। তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা চালানো হয়। সংবাদ প্রকাশের নামে রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের চরিত্র হনন করে থাকেন নিয়মিত। এসব আক্রমণ সাধারণত বিএনপি-জামায়াত ও বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের দিকেই পরিচালিত হয়।
পুলিশের কাছে চাঁদা দাবি (২০০৪)
২০০৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর পাহাড়তলী থানার তৎকালীন একজন এএসআই-এর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা নেন আয়ান শর্মা। ওই এএসআই সাংবাদিক ইউনিয়নে অভিযোগ করলে ইউনিয়নের তৎকালীন নেতারা প্রেসক্লাব ভবনের সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে আয়ান শর্মা ও তার সহযোগীকে হাজির করেন। সেখানে অপরাধ স্বীকার করে ভবিষ্যতে এমন কাজে না জড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুচলেখা দেন। এ ঘটনার পর স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে তার ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ হয়।
ডিবির তদন্তে চাঁদাবাজ প্রমাণ
প্রেসক্লাবে অঙ্গীকারনামা দেওয়ার জেরে আয়ান শর্মা তৎকালীন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ ও কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ দেন।
২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন পুলিশ কমিশনার এ অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দেন। একই বছরের ১৯ অক্টোবর ডিবির তৎকালীন সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার একেএম মোশাররফ হোসেন মিয়াজী তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তদন্তে আয়ান শর্মাকে “সাংবাদিক পরিচয়ধারী চাঁদাবাজ” হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়
আয়ান শর্মা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে থাকে। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মানুষ ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের সময় নষ্ট করে। তার মিথ্যা অভিযোগ তদন্ত করে সরকারি কাগজকলম ও মূল্যবান সময়ের অপচয় ছাড়া কিছুই হয় না।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

সারাদেশ

মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক হলেন সাব্বির আহমেদ সামাদ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে প্রচার সম্পাদক পদে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার একনিষ্ঠ ও ত্যাগী ছাত্রনেতা সাব্বির আহমেদ সামাদ।
সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,