সারাদেশ

পিরোজপুরে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের জমি দখলের পাঁয়তারা 

পিরোজপুর প্রতিনিধি:
পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শহিদুল্লাহ মিয়ার ৬০ বছরের একটি ভোগ দখলীয় জমি দখলের পাঁয়তারার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় লাল মিয়া সহ একদল কথিত ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্তরা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের ভোগ দখলীয় জমিতে গত ৫ আগষ্টের পরে সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে জবরদখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এঘটনায় অভিযুক্তদের নিয়ে একধিকবার শালিস বৈঠকে বসে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে চেয়ারম্যানের পক্ষে রায় দিয়েছেন। প্রতিপক্ষ লাল মিয়া গ্রুপ তা অমান্য করে জমিটি নিজেদের বলে দাবি করছেন। নিরুপায় হয়ে প্রয়াত চেয়ারম্যানের ছেলেরা ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা সহ থানায় কাগজপত্র দেখালেও তারা আইনকে বৃদ্ধাআঙ্গুলি দেখিয়ে ভূমির প্রকৃত মালিকদের হত্যার হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলার বলদিয়া কাটাখালি গ্রামে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শহিদুল্লাহ মিয়া ১৯৬৬ সালে ১৩ একর ৫৯ শতকের একটি জমি ক্রয় করেন। সেই থেকে জমিটি তিনি ভোগ দখল করে আসছিলেন। ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর স্থানীয় আলাউদ্দীন আলো, লালমিয়া, আলআমীন, হারুন মিয়া সহ দশ থেকে বার জনের একটি গ্রুপ ওই জমিটি নিজেদের ওয়ারিশ দাবি করে জমিতে কয়েকটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়। এ নিয়ে চেয়ারম্যানের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম শাহিন প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হাতে লাঠিসোটা নিয়ে এসে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
ঘটনার প্রাথমিক পর্যায়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা লাল মিয়া গ্রুপের অনূকুলে কাগজপত্র দেখতে চাইলে তারা মৌখিক ওয়ারিশ দাবি করে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। পরে সাইফুল ইসলাম নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) সহকারি কমিশনার (ভূমি) সহ নিকটস্থ থানায় অভিযোগ জমা দেন। তারা কাগজপত্রে পর্যালোচনা করে চেয়ারম্যানের পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এসময় বিবাদীদের নিকট তাদের দাবির পক্ষে কাগজ দেখতে চাইলে তারা কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই জমি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ মিয়া ক্রয়সূত্রে মালিক। আমার এলাকার একটি পক্ষ ওই জমি নিজের ওয়ারিশ দাবি করেছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের বিরোধ চলমান। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা একাধিকবার গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করলেও অভিযুক্ত লাল মিয়া তা মানছে না।
বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান সাইদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ১৪ একরের জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলছে। মামলা চলমান থাকায় আদালত কর্তৃক ওই জমির উপর ৪৪ ধারা জারি করা আছে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন এর পরে একটি মহল ওই জমি দখল করে ধান কেটে নিয়েছে। তারা আইন আদালত ও গ্রাম্য সালিশি কোনটাই মানছে না। তাদের দাবি ওই জমি ওয়ারিশ সূত্রে তাদের। কিন্তু তারা কোন ডকুমেন্টস দেখাতে পারছে না।
ভুক্তভোগী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম শাহিন বলেন, জমিটি তার পিতা ১৯৬৬ সালে ক্রয়সূত্রে মালিক। সেই থেকে তারা ভোগদখল করে আসছিলেন। সম্প্রতি ওই এলাকার মো. আলাউদ্দীন, মো. লালমিয়া, মো. হারুন মিয়া সহ একটি লাঠিয়াল বাহিনী জমিতে সাইনবোর্ড লাগিয়ে নিজেদের বলে দাবি করছে। এ নিয়ে একাধিকবার শালিস বৈঠকে বসলেও তারা কিছুই মানছেনা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্তরা বলেন, তারা ওয়ারিশসূত্রে ওই জমির মালিক। এতবছর তারা জোড়পূর্বক জমি খেয়েছে। এখন ওই জমি আর ছাড়বোনা। ওখানে সাইনবোর্ড লাগিয়েছি।
বলদিয়া ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, দলিল, পর্চা, দখলনুসারে মুলত ওই জমির মালিল সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শহিদুল্লাহ মিয়া। আমি কাগজপত্রনুসারে তাদের পক্ষে রিপোর্ট দিয়েছিলাম। এখন অপরপক্ষ কোন কিছুই মানেনা। শুনেছি, চেয়ারম্যানের ছেলেরা আদালতে একটি মামলা করেছে। এখন সে মামলাও উপেক্ষা করে ওই পক্ষটি জমির ধান কেটে নিচ্ছে। মূলত ওইপক্ষের লোকজন খুবই উশৃংখল প্রকৃতির।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,
সারাদেশ

আইনপুর গ্রামে পরিতোষ , সন্তোষ বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে দুর্ঘটনা ঘটে

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আইনপুর গ্রামের পরিতোষ সূত্রধর ও সন্তোষ সূত্রধর বাড়িতে আগুনে দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার ০৭/০৮/২৪ ইং