চিরিরবন্দরে শীত উপেক্ষা করে বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষক।

এনামুল মবিন(সবুজ)
জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুর.
উত্তরের জেলা দিনাজপুরে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সকাল গড়িয়ে দুপুরের পর স্বল্প সময়ের জন্য সূর্যের দেখা মিললেও তেমন তাপ অনুভূত হচ্ছে না। শীতের দাপটে কাঁপছে মানুষ। শীত সাথে হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীত উপেক্ষা করে বোরোধানের জমি তৈরি ও চারা রোপণ করছেন দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা।
সরজমিন চিরিরবন্দর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘু্রে দেখা গেছে, ভোর থেকে ঘন কুয়াশা ও শীত উপেক্ষা করে কৃষকরা বোরো চারা রোপণ ও জমি তৈরিতে ব্যস্ত। চাষিরা ইলেকট্রিক পাম্প বা শ্যালো মেশিনের সাহায্যে জমিতে পানি দিয়ে ধান রোপণের জন্য জমি উপযোগী করে তুলছেন। কেউ কেউ ছোট পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর বা কালটিভেটর দিয়ে জমি চাষ করে ইরি-বোরো রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন।
তবে ঘন কুয়াশা আর শীতের মধ্যে কিভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, জানতে চাইলে উপজেলার ফতেজংপুর এলাকায় বোরো ধানের জন্য জমি তৈরির সময় এরশাদ আলী বলেন, ‘কুয়াশা থাকলেও শীত একটু কমে গেছে। কাজ করি আহার জোটানোর জন্য। আমরা ধান না ফলাইলে দেশের মানুষ খাইব কি!’
কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এ বছর জমিতে বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের ধান রোপণ করছেন। অনেকেই শ্রমিকদের সঙ্গে নিজেরাও বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। কয়েকজন কৃষক আরও জানান, আমাদের কৃষকদের জমির ফসল দিয়েই চলতে হয়। সময়মতো ধান চাষ না করলে চলবো কী করে? তাই তীব্র শীত উপেক্ষা করেই মাঠে কাজ করতে হচ্ছে। শীতে ঠান্ডা পানিতে কাজ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। জমি চাষ করে সার-পানি দিয়ে বোরো ধান রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করছি। বীজতলা থেকে চারা এনে প্রস্তুতকৃত জমিতে রোপণ করবো। কিছু জমিতে চারা রোপণ শেষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড রয়েছে ১ হাজার ৮৬০ ও ঊফসী ১৭ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমি। ইরি-বোরো চাষের জন্য ৯৮২ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, বোরো ধান রোপণ শুরু থেকে কাটা-মাড়াই পর্যন্ত ৯০দিন সময় লাগে। উপজেলায় সবেমাত্র রোপণ শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার বোরো ধানের ভালো ফলন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।