একমাস পর চাচাতো ভাই বিপুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি আসাদুজ্জামান তালুকদার আপেলকে আটক

রুমান শাহরিয়ার, সরিষাবাড়ী(জামালপুর) প্রতিনিধিঃ
জামালপুরের সরিষাবাড়িতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে চাচাতো ভাই বিপুলকে কুপিয়ে হত্যা মামলার ঘটনায় প্রধান আসামি আসাদুজ্জামান তালুকদার আপেলকে(৪০) আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (২৩শে ফেব্রুয়ারি) রাতের প্রথম প্রহরে বিপুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি আপেলকে মাধবপুর থানার হরিপুর এলাকা হতে আটক করে জেলা গোয়েন্দা সংস্থা(ডিবি)।
আটককৃত আপেল সরিষাবাড়ি উপজেলার তারাকান্দি এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে।
রবিবার ২৩শে ফেব্রুয়ারি দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জামালপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম।
এসময় লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, গত ১৭ জানুয়ারি জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার তারাকান্দি এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আটককৃত প্রধান আসামি আসাদুজ্জামান তালুকদার আপেল ও তার গংরা মিলে তার চাচাতো ভাই আতাউর রহমান বিপুলের (৪০) ওপর হামলা চালায়। এসময় আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ এবং চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আতাউর রহমান বিপুলকে এলোপাথাড়িভাবে কোপাতে থাকে এবং বিপুলের ডানহাত ও ডান পা শরীর হতে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
এক পর্যায়ে বিপুলের স্ত্রী মুক্তা বেগম ও তার মা আসমা বেগম আসামিদের বাধা প্রদান করলে আসামিরা তাদেরকেও কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে।
এসময় তাদের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা আহত তিন জনকে উদ্ধার করে সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাত-পা বিচ্ছিন্ন হওয়া বিপুলকে মৃত ঘোষণা করেন এবং বিপুলের স্ত্রী ও তার মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে বদলি করেন। বর্তমানে তারা সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পরবর্তীতে ঘটনার দিন নিহত বিপুলের ভাই আলামিন বাদী হয়ে সরিষাবাড়ি থানায় ১০ জনকে নামীয় ও আরও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এসময় পুলিশ সুপার আরও বলেন, মামলা দায়েরের পর সরিষাবাড়ি থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক বিভিন্ন স্থানে অভিযান করে এজাহার নামীয় ২ নম্বর আসামি মোছাঃ আনোয়ারা বেগম ও ৪ নম্বর আসামি সাজিত ইসলাম তানজিলকে আটক করে।
এরপর ২০ জানুয়ারি জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) গোপন তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে গাজিপুর মেট্রোপলিটন এলাকার চক্রবর্তী ট্যাক এলাকা থেকে এজাহার নামীয় তানজিল ইসলাম তাসিন(২৬), মো. তাসলিমুল ইসলাম তমাল(২২) ও বিন্দু তালুকদারকে(২৪) কে আটক করতে সক্ষম হয়।
একই মামলায় চলতি মাসের ৭ তারিখে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন জিরানী এলাকা হতে মামলার এজাহার নামীয় আরেক আসামি রোকেয়া ওরফে তুহিনা বেগমকে(৪২) আটক করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, এই হত্যা মামলার এজাহার নামীয় ৬ জন আসামি আটক হলেও ১ নম্বর আসামিসহ ৪ জন গা ঢাকা দেয়। পরবর্তীতে শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে জামালপুর জেলা গোয়েন্দা সংস্থা(ডিবি) গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করলে মাধবপুর থানার হরিপুর এলাকা হতে মামলার প্রধান আসামি আসাদুজ্জামান আপেলকে আটক করে।
উল্লেখ্য, এঘটনায় এজাহার নামীয় মোট ১০ জন আসামির মধ্যে ইতোমধ্যে ৭ জন আসামিকে আটক করেছে জামালপুর জেলা পুলিশ।