৪ যুগ ধরে পত্রিকা বিক্রি যার নেশা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
একেবারে তরতাজা তরুণ থাকতে পত্রিকা বিলির কাজ শুরু করেন সাটুরিয়ার জামাল। জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে দেখেন, পত্রিকা বিলি করার এই কাজে পার হয়ে গেছে প্রায় ৪ যুগ।
৭৮ সাল থেকে পত্রিকা বিক্রি শুরু। আজ অবধি হকারি করে যাচ্ছেন। রোদ-বৃষ্টি-ঝড় বা কনকনে শীত, যা-ই থাকুক না কেন, সব সামলে পত্রিকা ঠিকই পাঠকের দ্বারে পৌঁছে দেন জামাল। অসুস্থ হলেও দমে যাননা জামাল। পত্রিকা গুছিয়ে কর্মচারী দিয়ে পত্রিকা বিলি করেন। রেখেছেন সাত আটজন কর্মচারী। নিজের সংসারে সচ্ছলতার পাশাপাশি বেশ কয়েকজনের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। ভোরের সূর্য উঠার আগে নবীনগর, বারবারিয়া থেকে পত্রিকা সংগ্রহ করে কাওয়ালীপাড়া বাসায় এনে পত্রিকা গোছগাছ করে সাটুরিয়া এসে পত্রিকা বিলি করেন দোকান পাট, অফিস, বাসা বাড়িতে। প্রায় ৪ যুগ একটানা এ কাজ করে যাচ্ছেন। উপজেলার সমস্ত সংবাদকর্মী জামাল ভাইয়ের উপর ভরসা। সব প্রতিনিধির নিউজ পেপার তাদের পৌঁছে দেন। এলাকার সংবাদ প্রকাশ হলে পাঠকের চাহিদা বেড়ে যায়। বেকার যুবকেরা জামাল ভাইকে খুঁজে ফেরেন চাকরি বিজ্ঞাপন পত্রিকার জন্য। পত্রিকা বিক্রি করে কাওয়ালী পাড়া বাজারে করেছেন দ্বিতল পাকা বাড়ী। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেকে ঢাকা ভার্সিটিতে পড়াচ্ছেন। নিজের পরিবারের অন্য সদস্যদের খাওয়া পড়ার পাশাপাশি শ্বশুর বাড়ীর লোকজনের দেখা শোনাও করেন। চার যুগের হকারী জীবনে দূর্ঘটনায় শিকার হয়েছেন দুবার। মোটর সাইকেল এ্যাকসিডেন্ট করে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন। তবুও পত্রিকা বিক্রি থেমে থাকেনি। তাই তো অবলীলায় বলে গেলেন পত্রিকা বিক্রিই তার রিশা (নেশা) অন্য কোন রিশা নাই।