জুলাই আন্দোলনে বিতর্কিত পোস্ট, কলাপাড়ায় চিকিৎসাকের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর

আসাদুল্লাহ হাসান মুসা,পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ- পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সদ্য পদোন্নতি পাওয়া চিকিৎসক ডা. জে এইচ খান লেলিনের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে কলাপাড়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স মাঠে ‘কলাপাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে একই দাবিতে মানববন্ধন করেন সংগঠনের সদস্যরা। আন্দোলনের সূত্রপাত হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডা. লেলিনের একটি বিতর্কিত পোস্ট ঘিরে। পোস্টটিতে লেখা ছিল— “দে দে মরন কামড় দে, দেরি করিস না। অস্তিত্বে বাংলাদেশ শেখ হাসিনা।” বিষয়টি ভাইরাল হলে অনেকে তাকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে অভিহিত করে এবং তার অপসারণের দাবি তোলে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ এক যুগ ধরে তিনি ক্ষমতাসীন দলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, পরীক্ষা বাণিজ্য, সরকারি জমি আত্মসাৎসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, তার মালিকানাধীন ‘ম্যাক্স ক্লিনিক’ ও ‘কলাপাড়া ক্লিনিকে’ রোগীদের জোরপূর্বক পরীক্ষা করানো হতো।
২০২১ সালে ভুল চিকিৎসার কারণে নবজাতকসহ এক প্রসূতির মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ২০২২ সালে সরকারি জায়গা বিক্রি করে ১৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হলেও বিচারপ্রক্রিয়া রহস্যজনক কারণে থেমে যায়। ২০২৩ সালে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়।
‘কলাপাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নেতা মাশরাফি কামাল শাফি বলেন, “ফ্যাসিবাদের দোসর লেলিনের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। আজকের গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে ৮০০ মানুষ স্বাক্ষর করেছেন। এসব স্বাক্ষর জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
অন্যদিকে, ডা. লেলিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ল্যাব সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য এসব করছে।”
পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন কবির বলেন, “এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”