পবিপ্রবির ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণাঢ্য আয়োজন

আসাদুল্লাহ হাসান মুসা, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ-দক্ষিণাঞ্চলের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার অন্যতম কেন্দ্র পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) তাদের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করেছে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর এভাবে আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালন করা হলো।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম হেমায়েত জাহান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবদুল লতিফ, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ক্যাম্পাসজুড়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় বৃক্ষরোপণ ও রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সভাপতিত্ব করেন পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টাডিজের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান এবং প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম।
আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়।
উপাচার্য বলেন,
“দক্ষ জনশক্তি তৈরি, উচ্চশিক্ষার প্রসার এবং গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচনে আমরা নিরলস কাজ করছি। ভবিষ্যতে পবিপ্রবিকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি, গবেষণা সম্প্রসারণ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করবো।”
দুপুরের পর কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, হাঁড়িভাঙা, হাঁস-মুরগি দৌড় ও রশি টানাটানির মতো জনপ্রিয় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বিকেলে টিএসসি কনফারেন্স হলে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক উপস্থাপনা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, শিক্ষার্থী হল, একাডেমিক ভবনসহ পুরো ক্যাম্পাস সাজানো হয়। প্রবেশপথে তোরণ নির্মাণ, রোড ডিভাইডার ও আইল্যান্ডসমূহ নান্দনিকভাবে সাজানো হয়।
বর্তমানে পবিপ্রবিতে ৮টি অনুষদে প্রায় ৪,২৯৬ শিক্ষার্থী স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ে অধ্যয়ন করছেন। এখানে ২৪৭ জন শিক্ষক, ২২০ জন কর্মকর্তা ও ৪৮৯ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন।
উন্নয়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ৪৫০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর আওতায় নতুন একাডেমিক ভবন, হল, মিনি স্টেডিয়াম, আধুনিক ব্যায়ামাগারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। গবেষণায়ও বিশ্ববিদ্যালয়টি উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে, ইতোমধ্যে ৮০১টি গবেষণা প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
উপাচার্য বলেন,
“আমরা গবেষণাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছি। শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে জোর দিচ্ছি। দক্ষিণাঞ্চলে উচ্চশিক্ষার প্রসারে পবিপ্রবি এখন একটি গর্বের নাম।”