স্লুইজ-ঘাট দখল নিতে রাঙ্গাবালীতে হামলায় নারী সহ আহত ৫, যুবদল নেতার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর জুতা-ঝাড়ু মিছিল

পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ- পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার পূর্ব বাহেরচরে স্লুইসগেট ও ঘাট দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নিয়াজ আকনের অনুসারীরা। আহতরা পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে বাহেরচর বাজারে সন্ত্রাসবিরোধী মানববন্ধন ও ঝাড়ু-জুতা মিছিল করে এলাকাবাসী। এ কর্মসূচিতে নারী-পুরুষসহ অন্তত ২০০ জন অংশ নেন। তারা ‘সন্ত্রাস মুক্ত বাহেরচর চাই’, ‘নিয়াজ আকনের শাস্তি চাই’ শ্লোগানে এলাকা মুখর করে তোলেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পূর্ব বাহেরচরের গুরুত্বপূর্ণ স্লুইজ ঘাট টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইজারা নিয়েও পরিচালনা করতে পারছে না ইজারাদাররা। সম্প্রতি নিয়াজ আকনে অনুসারীরা সেখানে দখল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এ নিয়ে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে পূর্ব বাহেরচর স্লুইজ এলাকায় নিয়াজ আকনের অনুসারী ও রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ খন্দকারের নেতৃত্বে মাহাবুব মোল্লা, বাতেন, কামরুজ, মোকলেছ ও রিপন সহ ৩০-৪০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল বিএনপি ও যুবদল নেতাদের ওপর হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত অন্তত ৫ জন।
ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের ওপর ধারালো অস্ত্র ও হকিস্টিক দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। বাবাকে রক্ষা করতে এলে তানিয়া নামের এক নারীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। হামলাকারীরা অনেকের ঘরবাড়িতেও ভাঙচুর চালায়।
একইদিন আরেকটি ঘটনায় স্থানীয় একজনের বিয়ের কেনাকাটা করতে আসা ছোট বোন জামাই ও তার ভাইয়ের ওপরও হামলা হয়। নিয়াজ আকনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তাদের মারধর করেন। পরে প্রতিবাদ করতে আসলে স্কুল শিক্ষক রাজীব মাহমুদের ওপরও চড়াও হয় তারা। নিয়াজ আকন নিজে তার কলার ধরে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ ওঠে।
আহতরা থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে চাইলে পুলিশ মামলা না নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দেয় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এলাকাবাসীর দাবি, ৫ জুনের পর থেকে পূর্ব বাহেরচর ও মাদারবুনিয়ার বেশিরভাগ ঘের জোরপূর্বক নিয়াজ আকনের দখলে চলে গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি দেখেও নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ।
এই ঘটনার দ্রুত বিচার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মু. নিয়াজ আকন বলেন, আমাকে নিয়ে একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করছে। এসবের সাথে আমি কোন সম্পর্ক নেই।
এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ওসি মো. এমারৎ হোসেন বলেন, ভুক্তভোগীরা থানায় এসেছিল। তাদেরকে চিকিৎসা নিতে বলেছি।
##