হিজাব না খোলায় দাখিল পরীক্ষার্থীদের খাতা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ

আসাদুল্লাহ হাসান মুসা,পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ- পটুয়াখালীর বাউফলে ছালেহিয়া ফাযিল মাদরাসা দাখিল পরীক্ষাকেন্দ্রে হিজাব না খোলায় চারজন ছাত্রী শাস্তির মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে হাদিস বিষয়ের পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্র পরিদর্শনে আসা ট্যাগ অফিসার পরীক্ষার্থীদের হিজাব খুলে মুখ দেখাতে বলেন। এতে আপত্তি জানালে চারজন ছাত্রীর উত্তরপত্র কেড়ে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে।
প্রত্যক্ষদর্শী পরীক্ষার্থীরা জানান, দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে কালো পোশাক পরা এক পুরুষ কর্মকর্তা কক্ষে প্রবেশ করে ছাত্রীদের হিজাব খুলে মুখ দেখাতে বলেন। অনেকেই প্রতিবাদ করলেও চারজন মুখ না খুললে তাদের খাতা কেড়ে নেওয়া হয়। পরে একজন ছাত্রী কান্নাকাটি শুরু করলে তার খাতা ফিরিয়ে দেওয়া হলেও বাকি তিনজনের খাতা ফেরত দেওয়া হয়নি।
ভুক্তভোগী এক পরীক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমি ৮০ নম্বরের উত্তর লিখেছিলাম। কিন্তু হিজাব না খোলার কারণে আমার খাতা নিয়ে গেছেন। এটা আমাদের ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘন।”
এই কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার ছিলেন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) প্রকল্প কর্মকর্তা তুরাল প্রামাণিক। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি কোনো শিক্ষার্থীর খাতা নেইনি, হিজাব খোলার কথাও বলিনি। অধ্যক্ষ কয়েকজন ছাত্রীকে যাচাইয়ের জন্য বলেছিলেন মাত্র।”
তবে কেন্দ্র সচিব ও মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নজিরুল হক বলেন, “এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আজ কোনো ম্যাজিস্ট্রেট কেন্দ্রে ছিলেন না, কেবল ট্যাগ অফিসার ছিলেন।”
ঘটনার বিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “ছাত্রীদের মৌলিক ও ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করা উচিত। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”