কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় সাংবাদিকের চাঁদা দাবির অভিযোগ: মুদি দোকানিকে গরু কেনার টাকা দাবি করে হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী একটি এলাকায় এক মুদি দোকানির কাছ থেকে কোরবানির গরু কেনার জন্য চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে রেজাউল করিম নামের এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী মুদি দোকানি রফিক মিয়া অভিযোগ করেন, “রেজাউল করিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিকতার পরিচয় ব্যবহার করে স্থানীয়দের কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে নানা অজুহাতে টাকা আদায় করে আসছেন।”
রেজাউল করিম “কুমিল্লা ক্রাইম বার্তা” নামে একটি ফেসবুক পেইজ চালান, যেখানে নানা সময়ে টাকার বিনিময়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ করা হয় বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে এর আগেও প্রতারণার অভিযোগ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তবে তার তথাকথিত সাংবাদিকতার প্রভাবে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
ভুক্তভোগী রফিক মিয়া জানান, “আমার দোকান সীমান্তবর্তী এলাকায়, এখানে মাঝেমধ্যে মাদক কারবারিদের আনাগোনা দেখা যায়। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে রেজাউল আমার নাম জড়িয়ে ফেসবুক পেইজে মাদক ব্যবসার অভিযোগ তুলে একটি সংবাদ ছাপে। এরপর সেই সংবাদ দেখিয়ে সে আমার কাছে কোরবানির গরু কেনার জন্য টাকা দাবি করে।”
রফিক মিয়া আরও বলেন, “আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রেজাউল করিম আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিতে থাকে। তার সঙ্গে আমার কথোপকথনের কল রেকর্ড আমার কাছে সংরক্ষিত আছে, প্রয়োজনে তা প্রশাসনের সামনে উপস্থাপন করতে পারি।”
শশীদল ইউনিয়নের আরও কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, রেজাউল করিম প্রায় সময় মাদক বা চোরাচালান সংক্রান্ত মিথ্যা সংবাদ ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। অনেক সময় নিরীহ দোকানদার ও কৃষকদের নাম জড়িয়ে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার পাঁয়তারা চালান।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেন, “সাংবাদিকতা পবিত্র একটি পেশা, কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি এই পেশাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে জনগণকে হয়রানি করছে। রেজাউল করিম তার সংবাদমাধ্যম ব্যবহার করে সীমান্ত এলাকায় একপ্রকার সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।”
এলাকার সচেতন নাগরিক সমাজ এবং ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, এই ঘটনাটির দ্রুত তদন্ত করে সাংবাদিক রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তারা আরও বলেন, সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এমন ব্যক্তিদের অপতৎপরতা কঠোরভাবে দমন করা দরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”