তরিকুল ইসলাম হত্যা ও সংখ্যালঘুদের বাড়িতে লুটপাট ভাংচুর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন হিন্দু মহাজোটের।

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় তরিকুল ইসলাম হত্যা ও সংখ্যালঘু হিন্দুদের ১৮-২০ বাড়িতে লুটপাট, ভাংচুর এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে \”বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট\”।
আজ সোমবার (২৬ মে) সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে সংগঠনটি।
হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, প্রেসিডিয়াম মেম্বার সুজন দে, সহ সভাপতি দুলাল চন্দ্র মন্ডল, যুগ্ম মহাসচিব ডাঃ হেমন্ত কুমার দাস, বিশ্বনাথ মোহন্ত, নকুল চন্দ্র মন্ডল, সাংগঠণিক সম্পাদক কিশোর কুমার বর্মন, ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সভাপতি শ্যামল ঘোষ, হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সজিব কুন্ডু তপু, সাধারন সম্পাদক নিলয় পাল আদর, সাংগঠণিক সম্পাদক উৎপল ভৌমিক, অর্থ সম্পাদক পল্লব দাস, দপ্তর সম্পাদক সজিব চন্দ্র দাস, গণমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক শুভজিৎ চক্রবর্তী, নূপুর বসাক, সুমন পাল প্রমূখ।
বক্তাগণ বলেন, যশোরের অভয়নগর উপজেলার ডহরমসিয়াহাটি গ্রামের বাড়েদা পাড়ায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী একটি গ্রামে ধর্মীয় উৎসব চলার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার হামলা করে ২০টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ও ভাঙচুর, লুটপাট করা হয়েছে। বিএনপির স্থানীয় একজন নেতার হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। তিনদিন পার হতে চললেও এখন পর্যন্ত ওই হত্যাকান্ড এবং হামলার ঘটনায় কোন মামলা হয়নি, কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি। হামলার ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা এখনো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা রাতে নিজের বাড়িতে থাকছেন না। আশেপাশের গ্রামে আত্মীয়দের বাড়িতে রাতে থাকছেন। ২১ মে ২০২৫ প্রায় চার ঘণ্টা ধরে আগুনে জ্বলে পুড়েছে এ গ্রামের বাড়িগুলো। বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তার সমর্থকরা ওই বাড়েদা পাড়ার বাড়িগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেয়। একইসাথে চলে লুটপাট ও ভাঙচুর। আনুমানিক সন্ধ্যা ছয়টা দশ মিনিটের দিকে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে এবং পরে পৌনে সাতটায় আগুন দেওয়া হয়েছে। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বললেও স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস রাত এগারটার পর উপস্থিত হয়েছিল। হামলাকারীরা নিকটস্থ সুন্দলী বাজারের কয়েকটি দোকান লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে। ঘটনার দিন রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশকেও আসতে বাধা দেয়া হয়েছিল। ফায়ার সার্ভিসকেও বাধা দেয়া হয়েছিল। পরে সেনাবাহিনী এসে মনিরামপুর থেকে পরে ফায়ার সার্ভিসের একটা দল এসে কিছুটা আগুন নিভিয়েছে।
বক্তাগণ বলেন আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরে বিভিন্ন অযুহাতে হিন্দুদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার দুঃসহ স্মৃতিগুলো ভুলতে চেয়েছিল। হিন্দু সম্প্রদায় আশা করেছিলো বর্তমান সদাশয় অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের সময় হিন্দু সম্প্রদায় সুখ শান্তিতে ও আতঙ্কহীনভাবে জীবন যাপন করেতে পারবে। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের সে স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় সারাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় আতঙ্কগ্রস্থ। বক্তাগণ অবিলম্বে সকল দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে বিচারের দাবী জানান এবং ক্ষতিগ্রস্থদের যথাযথ ক্ষতিপুরন দাবী করেন।