সারাদেশ

গাইবান্ধার ছাত্র রাজনীতির আস্থার পথিক রবিউল ইসলাম লিয়াকত।

বায়েজীদ, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) :

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ছাত্র রাজনীতির ইতিহাস এবং ঐতিহ্য এতটাই উজ্জ্বল যে এখনো আমরা সগৌরবে স্মরণ করি। জাতীয় রাজনীতি কিংবা ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরীর প্রবেশদ্বার হিসেবে ছাত্র রাজনীতিকে মনে করা হয়। কিন্ত স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরেও কেন পুরনোকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে বর্তমান প্রজন্ম।
গাইবান্ধার ছাত্র রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনায় রয়েছেন রবিউল ইসলাম লিয়াকত। কঠোর আন্দোলন সংগ্রাম পালনে রাজপথে থেকে হামলা মামলা নির্যাতনের যার নাম বরাবরই উঠে আসে তিনি আর কেউ নন গাইবান্ধা জেলা ছাত্রদলের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক মো: রবিউল ইসলাম লিয়াকত। তার নেতৃত্বে দলের দুঃসময়ে চাঙ্গা ছিল জেলার ছাত্র রাজনীতি। আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে নিজের জীবন বাজি রেখে রাজপথে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন এই নেতা।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি করতে গিয়ে মাত্র ৩২ বছর বয়সে ৪০টিরও বেশি মামলাসহ একাধিকবার জেল খাটা জলজ্যান্ত উদাহরণ লিয়াকত। এই মামলা কাধে নিয়ে জেলার ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আছেন তিনি। জেলা সদরসহ ৬ টি থানার ছাত্র সংগঠনকে সুসংঘটিত করতে পাহাড় সমান দায়িত্ব নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শুনতে হচ্ছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। তার পরেও থেমে নেই তিনি।

শৈশব জীবন : শৈশব জীবন কেটেছে বর্তমান পৌর শহরের জামালপুর গ্রামে। তার বাবা সৈয়দজ্জামান একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতে। মা ছিলো গৃহবধূ। চার ভাই ও ১ বোনের মধ্যে লিয়াকত দ্বিতীয়। পড়াশুনার পাশাপাশি ছাত্র রাজনীতিতে জরিয়ে পরেন তিনি। সেই ছোট বেলা থেকেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আর্দশ বুকে ধারণ করে পথ চলা তার। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে জরিত।

শিক্ষা জীবন : ২০০৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে, পাশ করে, পরবর্তীতে পলিটেকনিকেলে কলেজে ভর্তি হয়ে অনেক বাধা বিপত্তি পরেও বিশেষ করে তখন ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেন তিনি।

ছাত্র রাজনীতির হাতে খড়ি : ছাত্র রাজনীতির হাতে খড়ি বা যার হাত ধরে ছাত্র রাজনীতিতে এসেছেন, তারই বড় ভাই মোত্তালিব সরকার বকুলের হাত ধড়ে এবং ততকালীন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রনির ভূমিকাও অনেক। সেই যে পথ চলা শুরু হয়েছে আজও চলছে। তার ভিতর নেই কোন পদ-পদবীর লোভ।

রাজনৈতিক জীবন : রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে বারবার। মিথ্যা মামলা দীর্ঘদিনের কারাবাস তাকে তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুতি করতে পারেনি। তিনি সিদ্ধান্তে অটল থেকেছেন। তার এই অনমনীয় মনোভাব কর্মীদের সাহস জুগিয়েছে। জাতীয়তাবাদী দলের কেন্দ্রীয় ঘোষিত সকল মিটিং মিছিল আন্দোলন সংগ্রামে সামনের সারিতে থেকে স্লোগান দেন। গত বছর ২৮ অক্টোবরের পর থেকে দফায় দফায় হরতাল অবরোধ পালনে যখন বহু নেতাকর্মী মুখ ফিরিয়ে রেখেছিল সেই সময় দিনে রাতে বিক্ষোভ মিছিল মশাল মিছিল নিয়ে মাঠে সংক্রিয় ছিলেন। যাকে নিয়ে আওয়ামী লীগ সহ থানা পুলিশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু কোন ভাবে দাবানো যায়নি তাকে। সকল দুঃসময়ে ছাত্র দলের পাশাপাশি অন্যান্য সংগঠনের নিয়মিত নেতাকর্মীদের খোঁজখবর রেখেছেন তিনি। সবকিছুর বাহিরে পুলিশে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাশকতা মামলায় জেলে যাওয়া দলীয় নেতাকর্মীদের কারাগার থেকে মুক্তি করতে উকিলের ফি ও তাদের বাড়ির বাজার দিতেন তিনি। সন্ত্রাস মাদক চাঁদাবাজ ও আওয়ামী লীগের দোসরদের বিরুদ্ধে হুংকার। সর্ব দিক মিলিয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা বর্তমানে রাজপথের আস্থার প্রতীক হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন লিয়াকতকে।

সিনিযর রাজনৈতিক ও সহকর্মীদের কথা : পলাশবাড়ী থানা বিএনপির সভাপতি আব্দুল সামাদ মন্ডল বলেন, লিয়াকত একজন বিশ্বস্ত জিয়ার সৈনিক। রাজপথের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। বিগত দিনে আন্দোলনের তার ভূমিকা প্রশংসনীয়। পুরা জেলায় তার সুনাম রয়েছে ছাত্র সমাজের মাঝে। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষৎ কামনা করি।

পলাশবাড়ী পৌর বিএনপির আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, লিয়াকত অত্যন্ত ভালো ছেলে। সাদা কে সাদা কালাকে কালো বলতে পারে।
নির্দিধায় আন্দোলন সংগ্রামে সম্মুখ থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার গুনাবলি আছে।

পলাশবাড়ী পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোতালিব সরকার বকুল বলেন, লিয়াকত আমার ছোট ভাই, আমার হাত ধরেই ও রাজনীতিতে আসে। সব সময় ওর জন্য শুভ কামনা থাকবে।

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তারেকুজ্জামন তারেক বলেন, একজন সহযোদ্ধা হিসাবে লিয়াকতের কোন তুলনা হয় না। আন্দোলন সংগ্রমে আমরা একসাথে রাজ পথে ছিলাম। একাধিক বার সে কারাবরণ করছে। নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমি ওর ভালটাই চাই।

জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মিল্লাত সরকার মিলন বলেন, আমরা একসাথে রাজনীতি শুরু করেছি।আমাদের মধ্যে বুঝাপড়া খুব ভাল। একসাথে মামলা ও কারাবাস করেছি দীর্ঘদিন। আমাদের দু’জনের দু’টি রেডিমেড গার্মেন্টসের দোকান ছিল তা আওয়ামীলীগে শাসন আম্বলে লুট ও ভাঙচুর করে। তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ যাতে উজ্জল হয়। সেই দোয়া করি।

জেলা ছাত্রদলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান নিক্সন বলেন, লিয়াকত আমার খুব কাছের একজন সহযোদ্ধা। আমার একসাথে দীর্ঘ দিন ধরে রাজনীতি করে আসছি। আমার দেখা একজন অবিরাম ক্লান্তহীন সহযোদ্ধা।

পলাশবাড়ী থানা সেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক মমিন মন্ডল বলেন, লিয়াকত আমার কাছে খুব ছোট ভাই। ওর মত একজন সৎ রাজনীতিবীদ খুব কম আছে। যেকোন সময় বা মুহূর্তে ওর ডাকে শতশত ছেলে রাজপথে নেমে আসে।

পলাশবাড়ী পৌর সেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক শামিম রেজা বলেন, রবিউল ইসলাম লিয়াকত আমার রাজনৈতিক গুরু, তার হাত ধরে আমি রাজনৈতিক অঙ্গনে পা রেখেছি। একসাথে দীর্ঘদিন কারাবাস করেছি আমরা। আমি তাকে আমার রাজনৈতিক অভিভাবক হিসাবে মানি। আমি তার উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনা করি।

পলাশবাড়ী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাজেদুল কবির মাজেদ বলেন, আমি লিয়াকত ভাইয়ের হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছি। সব চেয়ে বড় কথা ভাই খুব সাপোর্টিং। সব সময় তাকে আমরা পাশে পাই। বিভিন্ন প্রোগ্রামে তিনি আমাদের উৎসাহিত করেন।

ছাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে হারিয়েছেন নিজের শরীলের একটি অঙ্গ। দুর্বৃত্তদের আঘাতে তার হাতের একটি আঙ্গল হারিয়ে দলের প্রতি তার ভালবাসা দেখিয়েছেন। তারপরেও তিনি একটু ক্লান্ত হননি। বরং উজ্জীবিত হয়েছে।

জেলার বিভিন্ন থানায় তার আছে, অসংখ্যা শুভাকাঙ্ক্ষী। যারা অনেকেই মনে করে গাইবান্ধায় ছাত্র রাজনীতি মানেই লিয়াকত। অনেকে তাকে জেলার আইকন মনে করেন। তাকে অনুসরণ করেন, তার পরামর্শ মনোযোগ দিয়ে শুনেন। যে কোন বিপদে তাকে সবার আগে পাশে পায় কর্মীরা।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,
সারাদেশ

আইনপুর গ্রামে পরিতোষ , সন্তোষ বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে দুর্ঘটনা ঘটে

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আইনপুর গ্রামের পরিতোষ সূত্রধর ও সন্তোষ সূত্রধর বাড়িতে আগুনে দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার ০৭/০৮/২৪ ইং