টাঙ্গাইলে ভিজিএফ এর বিনামূল্যের চালে প্রভাবশালীদের ভাগ, ক্ষোভ হতদরিদ্রদের

খায়রুল খন্দকার টাঙ্গাইল:টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বিএনপির কিছু নেতাকর্মী ও প্রভাবশালীরা দলের নাম ব্যবহার করে গরীবের ভিজিএফের ১০ কেজির চালে ভাগ বসাচ্ছেন। তারা শতশত স্লীপ হাতিয়ে নিচ্ছেন। এতে বঞ্চিত অসংখ্য অসহায়, দুঃস্থ ও হতদরিদ্রদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে ভিজিএফের আওতায় উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে ১০ হাজার ২৯৫ জন অহসহায় ও হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণের জন্য ঈদ উপহার হিসেবে প্রায় ৩২ টন চাল বরাদ্দ এসেছে। তার মধ্যে অলোয়া, গাবসারা ও গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদে চাল বিতবরণ করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) সরেজমিনে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর ঘুরে অসংখ্য দুঃস্থ ও হতদরিদ্রদেরসাথে কথা বলে জানা যায়, তারা পরিষদের বারান্দায় ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে ঈদ উপহারের১০ কেজির একটি স্লীপের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে, কিন্তু পরিষদ থেকে তাদের কোনো স্লীপ দেয়া হচ্ছে না। শুধু গোবিন্দাসীতে এমন অনিয়ম নয়। উপজেলার ফলদা, অর্জুনা ও নিকরাইলেও একই চিত্র।
চেয়ারম্যানদের চাপ সৃষ্টি করে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে শতশত ভিজিএফের স্লীপ হাতিয়ে নিচ্ছেন কতিপয় নেতাকর্মীরা। বঞ্চিতরা অভিযোগ করে বলেন, মেম্বারদের কাছে গেলে তারা জানায় মাত্র কয়েকটি ভিজিএফের স্লীপ পেয়েছিলাম। কাকে রেখে কাকে দেব বুঝে উঠতে পারছি না। তারা আরও বলেন, আমরা হতদরিদ্রও গরীবরা চাল পাচ্ছি না। বিএনপির নাম করে তাদের দলীয় নেতাকর্মী ও প্রভাবশালীরা সরকারের ঈদ উপহারের চালে ভাগ বসিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক ইউপি সদস্য জানান, ঈদ উপহারের ভিজিএফের মাত্র ৩০/৩৫ টি করে স্লীপ দিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বাকিগুলো সে কি করেছে তিনিই জানেন।
গোবিন্দাসী ইউপি দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন বলেন, মেম্বারদের দেয়া হয়েছে ৩০টি করে, আমি দুঃস্থদের দেয়ার জন্য ১৫০টি নিয়েছি, প্রতিটি ওয়ার্ড বিএনপি নিয়েছে ৫০টি করে। এর বাইরে অন্যান্য বিএনপি ও তার সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাকিগুলো বণ্টন করে নিয়েছেন। কতিপয় নেতাকর্মী ও তাদের স্বজনরা চাল উত্তোলন করে প্রকাশ্যে অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রির অভিযোগ ও রয়েছে। ফলদা ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান আবু সাঈদ ওরফে স্বপন বলেন, তিনি নিজে বিতরণের জন্য নিয়েছেন২’শ, উপজেলা পরিষদ থেকে বিতরণের জন্য দেয়া হয়েছে ২’শ, দলীয় নেতাকর্মী নিয়েছে ৬’শ এবং বাকিগুলো মেম্বাদের দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোছা. পপি খাতুন বলেন, চেয়ারম্যান মেম্বারদের কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যেন প্রকৃত দুঃস্থ ও হতদরিদ্ররা সরকারের ঈদ উপহার পায় এবং এর কোনো ব্যতয় নাঘটে।