দেবীগঞ্জে কৃষি ফার্মে বহিরাগতদের হামলার ফার্মের শ্রমিক আহত

একেএম বজলুর রহমান, পঞ্চগড়
দেবীগঞ্জের কৃত্রিম প্রজনন বীজ উৎপাদন কেন্দ্রে বহিরাগত লোকজনদের হামলায় নিয়মিত শ্রমিকরা আহত হয়েছে। আহতদের দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
৩ জানুয়ারী সোমবার সকালে বীজ উৎপাদন কেন্দ্রে ৬০ জন শ্রমিক প্রতিদিনের মত কাজে
যোগদান করার জন্য বীজ উৎপাদন কেন্দ্রে যান। এসময় বহিরাগত লোকজনরা কাজে যোগদানে বাধা দিয়ে তাদের উপর হামলা করে। তাদের হামলায় আহত হন খাটুরিয়া এলাকার সহির উদ্দীনের ছেলে মজিবুল হক ও ফার্মগেট এলাকার রজব আলীর ছেলে বিশু মিয়া।
জামিরুল ইসলাম, মইনুল হোসেন , ইমান আলী ও মিলন মিয়া জানান আমরা ২০১৩ সালের মার্চ মাস থেকে দৈনিক হাজিরা হিসেবে কাজ করে আসতেছি। প্রায় ১৩ বছর থেকে আমরা কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে দৈনিক হাজিরা হিসেবে কাজ করছি। এরপরে সেখানে ১শ জনের একটি গ্রুপ পুনরায় কাজ করার জন্য কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে আসে। পরে তারা তাদের কাগজ দেখাতে না পেরে তারা পিছু হটে গিয়ে আমাদের ৬০ জনের দলের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে। তারা আরও জানান, আমরা ২ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে কাজে যোগদান করার সময় বিএনপির লোকজন পরিচয় দিয়ে আমাদের কাজে যোগদান করতে বাঁধা দেন। তারা বলেন, আমাদের কাগজ না আসা পর্যন্ত তোমরা কাজে যোগদান করতে পারবে না। আমরা জোরপূর্বক কাজে যোগদান করতে গেলে মন্ডল, সফিকুল, শান্ত, তরিকুল ও নাজিমুদ্দিন কাইলা তাদের লোকজন নিয়ে কাচের বোতল, বাঁশেরলাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদরর উপর হামলা করে। তারা বলে আমাদের কাগজ যতক্ষণ না আসে ততক্ষণ তোদের কাজ করতে দিবো না। ফার্মে ঢুকতে দিবো না। তাদের হামলায় মজিবুর ও বিশু গুরুতর আহত হন।
জানা যায়, গাজীপুরের বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট এর খামার বিভাগ গত ১৩ জানুয়ারী ৬০ জন মৌসুমী শ্রমিককে শ্রমিক হিসেবে কাজ করার অনুমতি দিয়ে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ প্রজনন বীজ উৎপাদন কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাকে চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয় মহাপরিচালক মহোদয়ের অনুমোদনক্রমে কাজ নাই, মুজুরি নাই ভিত্তিতে দৈনিক ৫শ টাকা মুজুরিতে প্রজনন বীজ উৎপাদন কেন্দ্রে গবেষণামূলক কাজকর্ম, বীজ উৎপাদন ও পরিচর্যা সুষ্ঠভাবে সম্পাদনের নিমিত্তে প্রস্তাবকৃত ৬০ জন মৌসুমী শ্রমিককে ১৫ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পুরনায় কাজ করানোর অনুমতি দেয়া হল। চিঠিটি প্রদান করেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ মোঃ আব্দুল মান্নান।
দেবীগঞ্জ কৃষি গবেষণা শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন জানান, গাজীপুর কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট থেকে ৬০ জনের অনুমোদন আছে। কিন্তু পরে যারা ফার্মে আসছে তাদের কোন কাগজ পত্র নাই। তারা জোর করে কাজে যোগদানের জন্য আসছিল।
দেবীগঞ্জ কৃত্তিম প্রজনন বীজ উৎপাদন কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ অমল কুমার দাস জানান, বহিরাগত কিছু লোকজন এসে প্রভাব খাটিয়ে তাদের কাজে যোগদানে বাধা দেন। তারা বলেন, আগে আমাদের অনুমোদন এনে দেন। তারপর আমাদের সাথে তারা কাজে যোগদান করবে। তারা ছাড়া তাতের কে কাজ করতে দিবোনা।
দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা জানান, শ্রমিকদের উপর হামলা হয়েছে। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দেওয়ার পরে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।