কক্সবাজারের দূরত্ব কমবে যদি সংস্কার হয় বাঁশখালী-চকরিয়া সড়ক।

মোঃসোহারফ (চট্টগ্রাম)
বাঁশখালী-চকরিয়ার প্রধান সড়ক সংস্কার হলে কক্সবাজারের সাথে চট্টগ্রামের দূরত্ব কমবে ৩৫ কিলোমিটার। পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী- সড়ক উন্নয়নে সম্ভাব্য ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। টানেল সংযোগ সড়ক হতে আনোয়ারা কালাবিবি দীঘির মোড় থেকে চকরিয়া পর্যন্ত এই ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার ৫৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার হবে। প্রকল্পটি ব্যয়বায়িত করা গেলে যোগাযোগব্যবস্থার আমুল পরিবর্তনের পাশাপাশি নতুন এক অর্থনৈতিক অঞ্চল আবির্ভূত হবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
টানেলের যানবাহন চলাচল বাড়ানো, দক্ষিণ চট্টগ্রামে রব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ও কক্সবাজার পর্যন্ত অর্থনৈতিক নেটওয়ার্ক গড়ার পরিকল্পনা হিসেবে টানেল সড়ক থেকে কক্সবাজার মূল সড়ক পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার উইট: সড়ক প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এটি যথাসময়ে অনুমোদিত না হওয়ায় টানেলে গাড়ি চলাচল বাড়ানোসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের সড়কব্যবস্থা এখনো পিছিয়ে রয়েছে। উক্ত এলাকা-বাসিরা দ্রুত প্রকল্পটির কয়বায়ন দেখতে চান। এই মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে আনোয়ারার কালাবিবির দীগি থেকে চকরিয়া পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার সড়ক ১৮ থেকে ৩৪ ফুটে উন্নীত হওয়ার পাশাপাশি টানেল হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলের যে সম্ভাবনা রয়েছে
তা আরও বেগবান হবে। আর চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের বিকল্প সড়ক হিসেবে যাত্রী সুবিধা ও চট্টগ্রাম কক্সবাজারের ৩৫ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রাম দক্ষিন সড়ক বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পটিয়া-আনোয়ারা বাঁশখালী টইটা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষে। এক বছর আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৫ সালে প্রকল্পটির কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট সরকারের পট-পরিবর্তনের পর বিগত সরকারের আমলে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে লুটপাট, অর্থ পাচার, মুদ্রাস্ফীতিসহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় অধিকাংশ প্রকল্পের উন্নয়নকাজে প্রভাব পড়েছে। সেই সঙ্গে বিগত সরকারের আমলে গৃহীত প্রকল্পগুলোর নানা দিকও পর্যালোচনা করছে বর্তমান সরকার। যার কারণে প্রকল্পগুটি এখনো মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পটি বড়বায়ন ও অনুমোদনের জন্য চলতি বছরের জানুয়ারিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বিগত অর্থবছরে প্রকল্পটি অনুমোদনের পর টেন্ডার প্রক্রিয়া হওয়ার কথা থাকলেও দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের ফলে সেটি এখনো অনুমোদন হয়নি।
বর্তমানে পিএবি-সড়ক। সড়কটির আনোয়ারা কালাবিবি দীঘির মোড়ের পর থেকে বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া
ইউনিয়নের চানপুর বাজার পর্যন্ত ১০০ ফুট ভূমি অধিগ্রহণ রয়েছে। চানপুর বাজার থেকে চকরিয়া পর্যন্ত সড়কটি মাত্র ১৬ ফুট প্রশয় রয়েছে। যার কারণে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার মানুষকে যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। সড়কটি যানবাহন চলাচলে প্রয়োজনের তুলনায় প্রশস্ত না হওয়ায় যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা লেগেই থাকে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, টানেলকে ঘিরে দক্ষিন চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণসহ সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কে বৈপ্লবিক উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পটিয়া-আনোয়ারা- বাঁশখালী-উইট। সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি বর্তমানে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী-টইটা সড়কের আনোয়ারার কালাবিবির দীঘির মোড়ের পর থেকে চকরিয়া পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার সড়ক ১৮ থেকে ৩৪ ফুটে উন্নীতকরণ করা হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে এ সড়কে যানজট দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে। লাখ লাখ মানুষ যোগাযোগ সুবিধা লাভ করবে। কক্সবাজারের সঙ্গে চট্টগ্রামের বিকল্প সড়ক হিসেবে যোগাযোগব্যবস্থায় এটি মাইলফলক হয়ে কাজ করবে।