ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক রাস্তা নাকি বাজার

গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের অবস্থা দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। একে দেশের অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়ক বলা হলেও বাস্তবে এটি এখন যেন একটি বিশৃঙ্খল বাজারে পরিণত হয়েছে। রাস্তার দুই পাশে অবৈধ দোকানপাট, যানবাহনের বিশৃঙ্খল পার্কিং এবং ফুটপাত দখল করে রাখা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। হাজার হাজার মানুষ এ দুর্ভোগের শিকার হলেও এখনো এর কার্যকর কোনো সমাধান হয়নি।
বিভিন্ন সময় পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন একাধিকবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করলেও দীর্ঘস্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। উচ্ছেদের পর কিছুদিন রাস্তা স্বাভাবিক থাকলেও, রহস্যজনকভাবে আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এসব অবৈধ দখলদারিত্ব বারবার ফিরে আসে। দোকানদাররা সাময়িকভাবে সরে গেলেও পরে আবার একই জায়গায় ব্যবসা চালিয়ে যেতে দেখা যায়।
এই মহাসড়কের কোনাবাড়ি, চন্দ্রা,সফিপুর, কালিয়াকৈরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে যানজট এখন নিত্যদিনের সমস্যা। ট্রাক, বাস, সিএনজি ও রিকশার অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণে রাস্তার অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। রাস্তার পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা, অস্থায়ী দোকানপাট বসানো, এবং যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামার কারণে যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পথচারীদের জন্য হাঁটাচলাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কর্মজীবী মানুষ ও শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে এর সমাধান চাইলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাস্তার পাশে দোকান বসানোর অনুমতি না থাকলেও নানা অজুহাতে তারা জায়গা দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও, পরে কোনো এক অজানা কারণে সব আগের মতোই হয়ে যায়। এতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ দিন দিন বাড়ছেই।
সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। এ ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ফুটপাত পুনরুদ্ধার, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
যদি যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ি অংশ বরাবরের মতোই বাজারের রূপে থেকে যাবে, যা ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ যানজট এবং জনদুর্ভোগের কারণ হতে পারে।